Q: Write a note on structural change of caste.
প্রশ্নঃ জাতিব্যবস্থার কাঠামোগত পরিবর্তন আলোচনা করো।
*********************************
ভূমিকাঃ জাতিপ্রথার কার্যগত পরিবর্তনের মতো
কাঠামোগত বা গঠনগত পরিবর্তনও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সময় ও সমাজব্যবস্থার পরিবর্তনের
সঙ্গে সঙ্গে জাতির গঠনকাঠামো পরিবর্তিত হবে এটাই স্বাভাবিক। যেমন আদিতে তিনটি জাতি
বা বর্ণ ক্ষত্রিয়, ব্রাহ্মণ ও বৈশ্য প্রধান ছিল এবং সামাজিক অধিকক্রমের নিরিখে ক্ষত্রিয়
সমাজই সবার ওপরে বিরাজ করত, পরে ক্রমান্বয়ে ব্রাহ্মণ ও বৈশ্যের অবস্থান ছিল। কিন্তু
পরবর্তীকালে মস্তিষ্কপ্রসূত বিদ্যাবলের কাছে ক্ষত্রিয়ের বাহুবল পরাজিত হলে ব্রাহ্মণ
ক্রমান্বয়ে শীর্ষস্থানে এবং ক্ষত্রিয় দ্বিতীয় স্তরে সামাজিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠালাভ করে।
শুধু তাই নয় উপরিউক্ত এই তিন বর্ণের সর্বনিম্নে শূদ্রের অবস্থানকে স্বীকার করা হলে
বর্ণব্যবস্থায় চতুর্বর্ণভিত্তিক কাঠামো গড়ে ওঠে। তবে বর্ণ বা জাতিভেদ কাঠামো এখানেই
থেমে থাকেনি চতুর্বর্ণের বাইরে অবস্থিত ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে পঞ্চম বর্ণ গড়ে ওঠার স্বপক্ষে
অনেকেই মত প্রদান করেছেন। যাইহোক জাতিপ্রথার কাঠামোগত পরিবর্তনগুলির মধ্যে নিম্নলিখিতগুলো
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য-
(i) জাতির সদস্যপদ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে পরিবর্তন: বিভিন্ন
জাতিগোষ্ঠীতে নতুন সদস্য নিযুক্ত হওয়ার ফলে জাতিগত আকার আয়তনের পরিবর্তন পরিলক্ষিত
হয়। সনাতন হিন্দুধর্ম কখনোই অনড়, অচল ছিল না। চিরাচরিতকাল ধরে হিন্দুধর্ম পরিবর্তনকে
সাগ্রহে গ্রহণ করেছে। ফলে বর্ণাশ্রমভিত্তিক বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীতে বিভক্ত হিন্দুধর্ম
যুগে যুগে বিবর্তিত হয়েছে। বর্ণাশ্রমভিত্তিক বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে অবিরাম ধারায়
বিভিন্ন গোষ্ঠীর আগমনে জাতিগোষ্ঠীগুলি নবরূপে উদ্ভাসিত। জাতিব্যবস্থায় সদস্যপদের পরিবর্তনের
সঙ্গে সঙ্গে জাতির গঠন কাঠামো দু-ভাবে রূপান্তরিত হয়। যথা- (a) বিভিন্ন আদিবাসী গোষ্ঠীর
হিন্দুধর্মে অন্তর্ভুক্তিকরণ (b) ধর্মান্তরিতকরণ।
(ii) পেশাগত পরিবর্তন: জাতির উৎপত্তি পেশার
ভিত্তি তে। অর্থাৎ জাতি ও পেশা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কিন্তু বর্তমানে এই অবস্থার আমূল
পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়। পূর্বে প্রত্যেকটি জাতির একটি স্বতন্ত্র পেশা ছিল। অনেক সময়
পেশার ভিত্তিতে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর নামকরণ হয়েছিল। কিন্তু আধুনিক যুগে পাশ্চাত্য শিক্ষার
বিস্তার, শিল্পায়ন, নগরায়ণ এবং উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে ওঠার ফলে জাতিগত পেশা প্রায়
বিলুপ্তির পথে। বর্তমানে কোনো ব্যক্তি তার জাতিগত পেশা গ্রহণে বাধ্য নয়।
(iii) আচরণগত পরিবর্তন: প্রত্যেকটি জাতিগোষ্ঠীর
নিজস্ব স্বতন্ত্র আচার-আচরণ, আদবকায়দা জাতিগত কার্যাবলিকে টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করত।
কিন্তু স্বতন্ত্র আচার-আচরণ, আদবকায়দা ইত্যাদি পরিবর্তনের ফলে প্রত্যেকটি জাতির জাতিগত
মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়েছে বলে মনে করা হয়। জাতিগত বেশভূষা, পোশাক-পরিচ্ছদ এবং পানভোজন
পূর্বের স্থানে নেই। প্রত্যেকটি জাতিগোষ্ঠী তাদের এই স্বতন্ত্র রূপগুলি হারিয়ে প্রত্যেকে
অভিন্ন জীবনধারার অংশীদার হয়ে পড়েছে। পূর্বে যেমন জাতিগত সংস্কৃতির ভিত্তিতেই কোনো
জাতির পরিচয় সুনির্দিষ্ট করা যেত। কিন্তু বর্তমানে প্রত্যেকে অভিন্ন জীবনধারার অংশীদার
হওয়ায় জাতিগত পরিচিতি নির্ধারণ করা সম্ভব নয়।
(iv) আন্তর্জাতি সম্পর্কের পরিবর্তন: ভারতীয়
সামাজিক কাঠামো নির্ধারণের ক্ষেত্রে চিরাচরিত আন্তর্জাতি ব্যবস্থা যে ভূমিকা পালন করত
তা কিন্তু বর্তমানে আর পরিলক্ষিত হয় না। আন্তর্জাতি সম্পর্ক এখন বিলুপ্তির পথে। গ্রামীণ
আর্থ-সামাজিক কাঠামোতে বিভিন্ন আন্তর্জাতি সম্পর্কের মাধ্যমে গ্রামীণ ঐক্য গড়ে উঠত।
কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন জাতিগুলির পারস্পরিক নির্ভরশীলতা এখন নেই বললেই চলে। ফলে আন্তর্জাতি
সম্পর্ক ধারাও পূর্বের মতো নেই, বর্তমানে আন্তর্জাতি সম্পর্ক নিম্নলিখিতভাবে পরিলক্ষিত
হয়।
(v) জাতি পঞ্চায়েতের বিলুপ্তি: গণতান্ত্রিক
ক্ষমতা বিস্তারের পূর্বে ভারতীয় গ্রামীণ শাসনব্যবস্থা ছিল জাতিভিত্তিক। প্রত্যেকটা
জাতিগোষ্ঠীর স্বতন্ত্র জাতি পঞ্চায়েত ছিল। এই জাতি পঞ্চায়েতগুলো তার সদস্যবর্গকে শাসনের
মাধ্যমে সমস্ত গ্রামের শাসনব্যবস্থা নিয়ন্ত্রিত হত। এই জাতি পঞ্চায়েত সাধারণত ওই জাতিগোষ্ঠীর
বয়োজ্যেষ্ঠ দশজন ব্যক্তিকে নিয়ে গঠিত হত। এইজন্য এর সাধারণ নাম ছিল ‘দশজন’। উত্তরবঙ্গে
এটি ‘দশজনের সমাজ’ নামে পরিচিত ছিল। তবে কখনো-কখনো এর সদস্য সংখ্যা পাঁচজন ছিল। জাতি
পঞ্চায়েতের প্রধানকে ‘মুখিয়া’ বা ‘সরপঞ্জ’ বলে। সারা ভারতবর্ষে এই জাতি পঞ্চায়েত সালিশি
সভা নামে পরিচিত।
জ্ঞ্যানজ্যোতি কোচিং সেন্টার
তোমাদের উজ্বল ভবিষ্যৎ
গড়ে তুলব আমরা, এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি
6295916282;
7076398606
জ্ঞ্যানজ্যোতি কোচিং সেন্টার
তোমাদের উজ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলব আমরা, এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি
অনলাইনে কোচিং নিতে হলে এবং বিভিন্ন নোট নিতে হলে এই নাম্বারে কল করুন।