Q: Write a note on structural and functional change of marriage.
প্রশ্নঃ বিবাহের কাঠামোগত এবং কার্যগত পরিবর্তনের ওপর একটি নিবন্ধ লেখো।
বিবাহের কাঠামোগত পরিবর্তনঃ
বিবাহের কাঠামোগত পরিবর্তনগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-
১. বৈবাহিক সংহতির ক্ষেত্রে পরিবর্তন:
সনাতন ভারতীয় ধর্মে বিবাহব্যবস্থা হল একটি পবিত্র বন্ধন। বিবাহব্যবস্থায় এই পবিত্র
বন্ধনের পরিবর্তন ঘটছে পাত্রপাত্রীর পারস্পরিক ঐক্য ও সংহতির অভাবে। বিবাহব্যবস্থার
পবিত্র বন্ধন আর পরিলক্ষিত হয় না। বর্তমান দম্পতির কাছে বিবাহের উদ্দেশ্য হল জীবন সাথী
সংগ্রহ করা। বর্তমানে বিবাহের পর নবদম্পত্তির পারস্পরিক নৈকট্য বা সাংসারিক বন্ধন ক্রমশ
ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হচ্ছে। পাত্রপাত্রী উভয়ই বিভিন্ন কর্মে ব্যস্ত থাকায় বৈবাহিক সম্পর্কের
গাম্ভীর্য ক্রমশ ম্লান হয়ে আসছে। তাই বিবাহব্যবস্থার পবিত্র বন্ধন বর্তমানে একটি চুক্তিতে
উপনীত হয়েছে।
২. বিবাহের ধরনের ক্ষেত্রে পরিবর্তন:
পূর্বে বহুগামী বা বহুবিবাহ ব্যবস্থা ছিল সমাজের প্রচলিত রীতি। এর মধ্যে পুরুষের বহুবিবাহ
প্রায় একপ্রকার সামাজিক স্বীকৃতি স্বরূপ ছিল। কিন্তু বর্তমানে এই ধরনের বিবাহ দেখা
যায় না বললেই চলে। বহুবিবাহ আইন করে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
৩. জীবনসঙ্গী পছন্দের প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন:
বর্তমানে পাত্রপাত্রী নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন ঘটেছে। পাত্রপাত্রী নির্বাচন
করার ক্ষেত্রে পারিবাবিক মতাদর্শের চেয়ে ছেলে-মেয়েদের মতাদর্শকে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া
হয়। তা ছাড়া জীবনসঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে জাতি-ধর্ম-বর্ণের ভূমিকা এখন নগণ্য। বর্তমানে
পাত্রপাত্রীর পেশাগত অবস্থা বা সামাজিক প্রতিপত্তিকে বিবাহের ক্ষেত্রে গুরুত্ব প্রদান
করা হয়ে থাকে।
৪. বিবাহের বয়সের ক্ষেত্রে পরিবর্তন:
বিবাহের বয়সের ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়। পূর্বে ছেলেমেয়েদের কম বয়সে বিবাহ
দেওয়ার প্রথা চিরাচরিত ভারতীয় সমাজের রীতি ছিল। এমনকি মেয়েদের রজস্বলার পূর্বেই বিবাহ
দেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল। বর্তমানে মেয়েদের 18 বছরের পূর্বে বিবাহ দেওয়া বেআইনি। বর্তমানে
বিবাহের ক্ষেত্রে পাত্রীর বয়স 18 এবং পাত্রের বয়স 21 বছর বাধ্যতামূলক।
৫. বিবাহের স্থায়িত্বের ক্ষেত্রে পরিবর্তন:
বর্তমানে বিবাহের স্থায়িত্বের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়। হিন্দুশাস্ত্র রীতি
অনুসারে বিবাহ ছিল একটি পবিত্র বন্ধন। মৃত্যুর পরেও এমনকি জন্মজন্মান্তরেও এই বন্ধনের
কথা বলা হয়। কিন্তু এই ধারণার মৌলিক পরিবর্তন ঘটেছে। বিবাহবিচ্ছেদ এখন আইনসিদ্ধ। ছেলেমেয়ে
এখন সমান অধিকারসম্পন্ন হওয়ায় তারা ইচ্ছা প্রকাশ করলে এই বন্ধনের বিচ্ছেদ ঘটাতে পারে।
বিবাহের কার্যগত পরিবর্তনঃ
বিবাহের কার্যগত পরিবর্তন-গুলোকে নিম্নলিখিতভাবে আলোচনা করা যেতে পারে-
১. সঙ্গীর যৌন আচরণের ক্ষেত্রে পরিবর্তন:
মানবসমাজে সমাজস্থ ব্যক্তিবর্গের যৌন আচরণকে বিবাহব্যবস্থার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা
হয়। সমাজে যৌন বিশৃঙ্খলতা রোধের উপায় হিসেবে এই বিবাহব্যবস্থার উৎপত্তি হয়েছিল বলে
মনে করা হয়। কিন্তু এ ধারণা বর্তমানে অমূলক। পাশ্চাত্য সমাজ-সভ্যতার প্রভাবে বিবাহিত
যৌনজীবনের ধারণা বদলে গেছে।
২. সহধর্মিনীর অর্থনৈতিক দায়দায়িত্বের ক্ষেত্রে পরিবর্তন:
সনাতন ভারতীয় সমাজে বিবাহের উদ্দেশ্য ছিল বিবাহিত কন্যার ভাত-কাপড়ের দায়িত্ব গ্রহণ
করা এবং এই দায়িত্ব বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নববধূর স্বামী গ্রহণ করে থাকে। বিবাহের
পর কন্যা বা নববধূ পিতার অধীনে থেকে স্বামীর অধীনে চলে আসে। অর্থাৎ বিবাহের পর কন্যা
বা নববধূর সমস্ত ধরনের আর্থিক দায়দায়িত্ব শ্বশুরবাড়ি অর্থাৎ স্বামীকে গ্রহণ করতে হয়।
কিন্তু বর্তমানে বিবাহের এই উদ্দেশ্য বা কার্যকলাপের ক্ষেত্রে পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়।
এখন অনেক কন্যা বা নববধূ আর্থিকভাবে স্বনির্ভরশীল। তারা পুরুষের মতো বাইরের জগতে অফিস-আদালত,
স্কুল-কলেজ প্রভৃতি স্থানে চাকরিরত। এমতাবস্থায় তারা স্বামীর ওপর আর্থিকভাবে নির্ভরশীল
নয়, বরং বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর বিপরীত চিত্র পরিলক্ষিত হয়।
৩. শিশু প্রতিপালন এবং পরিচর্যার ক্ষেত্রে পরিবর্তন: শিশু
প্রতিপালন ও পরিচর্যার ক্ষেত্রে বিবাহ ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়।
একসময় বলা হত শিশু প্রতিপালন পরিচর্যা বিবাহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য এবং কার্য।
কিন্তু বর্তমানে বিবাহের এ ধরনের কার্যাবলির ক্ষেত্রে পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। বিবাহিত
নবদম্পত্তির সন্তানাদির জন্মদান থেকে শুরু করে শিশুকে পরিচর্যার দায়দায়িত্ব সমাজস্থ
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওপর অর্পিত হয়েছে। শহরাঞ্চলে তো বটেই এমনকি গ্রামাঞ্চলেও শিশু
জন্মদানের ক্ষেত্রে এখন চিরাচরিত গ্রামীণ দাইমা বা ধাত্রীমাতা দেখা যায় না বললেই চলে।
তার জায়গায় এসেছে সরকার প্রশিক্ষিত নার্স বা দাইমা বা ধাত্রীমাতা। তা ছাড়া বেশিরভাগ
ক্ষেত্রেই গর্ভবতী মায়ের সন্তান প্রসব হসপিটাল বা নার্সিংহোমে সম্পন্ন হয়। শুধু তাই
নয় নবজাতকের জন্মের পরেই তার পরিচর্যা বা প্রতিপালনের ক্ষেত্রে পিতা-মাতার ভূমিকা অনেকাংশেই
বাড়ি ঝি-চাকরের ওপর বর্তায়। পিতা-মাতা উভয়েই যদি কোনো কর্মে নিযুক্ত বা চাকরিরতা হন
তাহলে তো সন্তান প্রতিপালনের পুরো দায়দায়িত্ব কাজের মাসি অথবা কোনো সামাজিক প্রতিষ্ঠানের
ওপর বর্তায়। এর ফলে কর্মরতা মায়ের জন্য শহরাঞ্চলে গড়ে উঠেছে দিবা পরিচর্যা কেন্দ্র
।
৪. গণমাধ্যমে পাত্রপাত্রীর খোঁজখবর: বর্তমানে জীবনসঙ্গী
বা সঙ্গিনী সংগ্রহ বা পছন্দের ক্ষেত্রে পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়। পূর্বে বিবাহযোগ্য পুত্র-কন্যার
জীবনসঙ্গী বা সঙ্গিনীর পছন্দ বা সংগ্রহের ক্ষেত্রে পরিবার বিশেষ দায়িত্ব গ্রহণ করে
থাকত। এক্ষেত্রে কোনো ঘটক এই দায়িত্ব পালন করত। কিন্তু বর্তমানে গণমাধ্যম বা বৈদ্যুতিক
গণমাধ্যমের মাধ্যমে কোনো ছেলে বা মেয়ে তাদের পছন্দের জীবনসঙ্গী বা সঙ্গিনী গ্রহণ করে
বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে পাত্রপাত্রী নিজেরাই নিজেদের পছন্দমতো অন্যান্য
সব দায়দায়িত্ব বহন করে।
জ্ঞ্যানজ্যোতি কোচিং সেন্টার
তোমাদের উজ্বল ভবিষ্যৎ
গড়ে তুলব আমরা, এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি
6295916282;
7076398606
জ্ঞ্যানজ্যোতি কোচিং সেন্টার
তোমাদের উজ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলব আমরা, এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি
অনলাইনে কোচিং নিতে হলে এবং বিভিন্ন নোট নিতে হলে এই নাম্বারে কল করুন।