৬) পরিবেশ শিক্ষার মূল উদ্দেশ্যগুলি কী?
পরিবেশ শিক্ষা একটি গতিশীল
এবং অপরিহার্য ক্ষেত্র, যার মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তি ও সমাজকে পরিবেশ সম্পর্কে
সচেতন করা এবং একটি টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য তাদের সক্ষম করে তোলা। এর
লক্ষ্য শুধু তথ্য সরবরাহ করা নয়, বরং মনোভাব, দক্ষতা এবং আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন
আনা।
Ø পরিবেশ শিক্ষার মূল
উদ্দেশ্যসমূহঃ
পরিবেশ শিক্ষার উদ্দেশ্যগুলো
বহুমুখী এবং একে অপরের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত:
১. সচেতনতা বৃদ্ধি: পরিবেশ শিক্ষার প্রথম এবং
প্রধান উদ্দেশ্য হলো পরিবেশগত সমস্যা এবং তাদের প্রভাব সম্পর্কে মানুষের মধ্যে
সচেতনতা বৃদ্ধি করা। এর মধ্যে রয়েছে বায়ু ও জল দূষণ, বন উজাড়, জীববৈচিত্র্যের
বিলুপ্তি, জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রাকৃতিক সম্পদের অপচয়। মানুষকে জানানো হয় যে
এই সমস্যাগুলো কত ব্যাপক এবং তাদের দৈনন্দিন জীবনকে কীভাবে প্রভাবিত করে। সচেতনতার
মাধ্যমেই মানুষ পরিবেশের প্রতি সংবেদনশীল হতে শেখে।
২. জ্ঞান অর্জন: পরিবেশ শিক্ষা মানুষকে
পরিবেশের কার্যকারিতা, বাস্তুতন্ত্রের জটিলতা এবং মানব সমাজের সাথে প্রকৃতির
আন্তঃসম্পর্ক সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে সাহায্য করে। এই জ্ঞানের মধ্যে প্রাকৃতিক
প্রক্রিয়া, পরিবেশগত নিয়মাবলী, মানবসৃষ্ট প্রভাব এবং পরিবেশগত সমস্যা সমাধানের উপায়
সম্পর্কে তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকে। উদাহরণস্বরূপ, শিক্ষার্থীরা শেখেন কীভাবে জীবাশ্ম
জ্বালানি গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত করে বা কীভাবে প্লাস্টিক দূষণ সামুদ্রিক জীবনকে
প্রভাবিত করে।
৩. মনোভাব গঠন: সচেতনতা ও জ্ঞানের পাশাপাশি
পরিবেশ শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হলো পরিবেশের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব এবং
মূল্যবোধ গড়ে তোলা। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরিবেশের প্রতি সম্মান, যত্ন
এবং দায়িত্ববোধ তৈরি হয়। তারা বুঝতে শেখে যে পরিবেশ একটি মূল্যবান সম্পদ এবং এর
সংরক্ষণ আমাদের সকলের সম্মিলিত দায়িত্ব। সহানুভূতি, নৈতিকতা এবং টেকসই জীবনযাপনের
আকাঙ্ক্ষা এই মনোভাবের অংশ।
৪. দক্ষতা বৃদ্ধি: পরিবেশ শিক্ষা মানুষকে
পরিবেশগত সমস্যা চিহ্নিত করতে, বিশ্লেষণ করতে এবং কার্যকর সমাধান খুঁজে বের করার
জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা বিকাশে সহায়তা করে। এর মধ্যে রয়েছে সমালোচনামূলক
চিন্তাভাবনা, সমস্যা সমাধান, সিদ্ধান্ত গ্রহণ, গবেষণা এবং যোগাযোগ দক্ষতা।
শিক্ষার্থীরা শিখতে পারে কীভাবে ডেটা বিশ্লেষণ করতে হয়, পরিবেশগত নীতি মূল্যায়ন
করতে হয় বা পরিবেশ-বান্ধব প্রকল্পের পরিকল্পনা করতে হয়।
৫.
অংশগ্রহণ ও কর্ম: পরিবেশ শিক্ষার চূড়ান্ত
উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তি ও সম্প্রদায়কে পরিবেশ সুরক্ষার জন্য সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ
এবং কর্মে উৎসাহিত করা। এর অর্থ হলো কেবল সমস্যা সম্পর্কে জানা নয়, বরং সেগুলোর
সমাধানে ভূমিকা রাখা। এটি বর্জ্য হ্রাস, শক্তি সংরক্ষণ, পুনর্ব্যবহার, বৃক্ষরোপণ,
স্থানীয় পরিবেশ আন্দোলনে অংশ নেওয়া এবং টেকসই জীবনধারা গ্রহণ করার মতো
পদক্ষেপগুলোকে উৎসাহিত করে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নিজেদের পরিবেশগত পরিবর্তনের
এজেন্ট হিসেবে দেখতে শেখে।
জ্ঞ্যানজ্যোতি কোচিং সেন্টার
তোমাদের উজ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলব আমরা, এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি
অনলাইনে কোচিং নিতে হলে এবং বিভিন্ন নোট নিতে হলে এই নাম্বারে কল করুন।