Q: Examine the role of National Interest as
one of the basic concepts of International Relations.
জাতীয় স্বার্থ হলো আন্তর্জাতিক সম্পর্কের
সবচেয়ে মৌলিক ও কেন্দ্রীয় ধারণাগুলোর মধ্যে অন্যতম। এটি এমন এক লক্ষ্য, উদ্দেশ্য বা
প্রয়োজন, যা একটি রাষ্ট্র তার পররাষ্ট্র নীতি নির্ধারণ, সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং আন্তর্জাতিক
পরিমণ্ডলে তার আচরণ পরিচালনার সময় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। বাস্তববাদী তাত্ত্বিকদের মতে,
জাতীয় স্বার্থই হলো আন্তর্জাতিক রাজনীতির মূল চালিকা শক্তি ।
জাতীয় স্বার্থ বলতে বোঝায় একটি জাতির
সুখ, নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং মর্যাদা রক্ষা ও প্রচারের আকাঙ্ক্ষা। জে. মরগেনথাউ
-এর মতো বাস্তববাদীরা মনে করেন, রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত বা নৈতিক মূল্যবোধের
চেয়ে জাতীয় স্বার্থের ভিত্তিতে ক্ষমতা অর্জন ও প্রয়োগ করা উচিত। জাতীয় স্বার্থ দুটি
প্রধান উপাদান নিয়ে গঠিত:
v আন্তর্জাতিক সম্পর্কে জাতীয় স্বার্থের
ভূমিকাঃ
জাতীয় স্বার্থ আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে
একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে:
১. পররাষ্ট্র নীতির ভিত্তিঃ জাতীয় স্বার্থ হলো একটি রাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির চূড়ান্ত
ভিত্তি ও নির্দেশক। প্রতিটি রাষ্ট্র তার পররাষ্ট্র নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের সময় সর্বাগ্রে
নিশ্চিত করতে চায় যে তার সিদ্ধান্তগুলো জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। উদাহরণস্বরূপ,
কোনো রাষ্ট্রের আঞ্চলিক নিরাপত্তা যদি বিপন্ন হয়, তবে সেই স্বার্থ রক্ষার জন্য দেশটি
সামরিক জোট গঠন বা নিরস্ত্রীকরণ চুক্তির পথে যেতে পারে।
২. রাষ্ট্রীয় আচরণের নির্দেশকঃ আন্তর্জাতিক অরাজক পরিবেশে, যখন কোনো কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ
থাকে না, তখন প্রতিটি রাষ্ট্র তার টিকে থাকা নিশ্চিত করতে স্ব-সহায়তার নীতি অবলম্বন করে। এই স্ব-সহায়তা মূলত জাতীয় স্বার্থ
দ্বারা পরিচালিত হয়। জাতীয় স্বার্থই রাষ্ট্রকে নির্ধারণ করতে সাহায্য করে যে কখন তাকে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে এবং কখন সহযোগিতা করতে হবে।
৩. ক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্যঃ বাস্তববাদীরা বিশ্বাস করেন যে আন্তর্জাতিক রাজনীতি মূলত
ক্ষমতা নিয়ে প্রতিযোগিতা। রাষ্ট্র তার জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষমতা
(সামরিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক) অর্জন করতে চায়। ক্ষমতা হলো জাতীয় স্বার্থ অর্জনের
প্রধান হাতিয়ার। কোনো রাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থের পরিধি যত বড় হবে, তার ক্ষমতা অর্জনের
আকাঙ্ক্ষা তত বেশি হবে।
৪. আন্তর্জাতিক আইনের ব্যাখ্যাকারকঃ রাষ্ট্রগুলো আন্তর্জাতিক আইন বা চুক্তিগুলো সাধারণত তাদের
জাতীয় স্বার্থের দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করে এবং সেগুলোর প্রতি তাদের আনুগত্য দেখায়।
যখন কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তির শর্তাবলী সরাসরি জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী হয়, তখন
রাষ্ট্রগুলো সেই চুক্তি থেকে সরে আসতে বা সেটিকে উপেক্ষা করতে দ্বিধা করে না।
৫. নৈতিকতার পরিমাপকঃ বাস্তববাদী দৃষ্টিকোণ থেকে, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে কোনো
সর্বজনীন নৈতিকতা নেই। বরং, রাষ্ট্রের কর্মকাণ্ডের নৈতিকতা তার জাতীয় স্বার্থ রক্ষার
সফলতার দ্বারা পরিমাপ করা হয়। যদি কোনো সিদ্ধান্ত জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করে, তবে সেটি
রাষ্ট্রের জন্য নৈতিকভাবে সঠিক বলে বিবেচিত হয়।
জাতীয় স্বার্থ আন্তর্জাতিক সম্পর্কের
একটি অপরিহার্য বিশ্লেষণাত্মক ধারণা। এটিই আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রগুলোর আচরণ,
তাদের সংঘাত বা জোট গঠনের কারণ এবং তাদের কূটনৈতিক কৌশলগুলোকে বুঝতে সাহায্য করে। যদিও
আদর্শবাদী বা উদারনৈতিক তাত্ত্বিকরা আন্তর্জাতিক আইন ও নৈতিকতার ভূমিকাকে জোর দেন,
তবুও বেশিরভাগ রাষ্ট্রীয় নেতা এবং নীতিনির্ধারক বিশ্বাস করেন যে জাতীয় স্বার্থই হলো
শেষ কথা।
জ্ঞ্যানজ্যোতি কোচিং সেন্টার
তোমাদের উজ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলব আমরা, এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি
অনলাইনে কোচিং নিতে হলে এবং বিভিন্ন নোট নিতে হলে এই নাম্বারে কল করুন।

