মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনা সম্পর্কে আলোচনা করো। #NBU #NOTES #GJCC

Nil's Niva
2 minute read
0

প্রশ্ন- মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনা সম্পর্কে আলোচনা করো। 

[Discuss about Mountbatten Plan.]   

Ø মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনার পটভূমি

১৯৪৫ সালের এপ্রিল মাসের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসানের পর ভারতীয় রাজনীতিতে অস্থিরতা অচলাবস্থা দেখা দিলে ব্রিটিশ সরকার ধীরে ধীরে ভারতীয়দের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করে। এই পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী অ্যাটলি ভারতের একটি মন্ত্রী মিশন পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্রিটিশ মন্ত্রিসভার তিনজন সদস্য ১৯৪৬ সালের মার্চ মাসে ভারতে আসেন এবং বিভিন্ন সুপারিশ করেন। তার মধ্যে অন্যতম সুপারিশ হল যতদিন না নতুন সংবিধান রচিত হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত একটি অন্তর্বর্তী জাতীয় সরকার গঠিত হবে। এই সুপারিশ অনুযায়ী লর্ড ওয়াভেল কংগ্রেস সভাপতি জওহরলাল নেহেরুকে সরকার গঠনের জন্য অনুরোধ করলে কংগ্রেস সম্মতি জানায়। কিন্তু এই ঘটনায় মুসলিম লীগ ক্ষুদ্ধ হয়ে প্রত্যক্ষ সংগ্রাম শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন। ফলে ১৯৪৬ সালের ১৬ই আগস্ট সমগ্র ভারতে প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস পালিত হয় এবং ওইদিন কলকাতায় ভয়াবহ দাঙ্গা হাঙ্গামা বাদে। এরপর থেকে সাম্প্রদায়িকতা সারা ভারতবর্ষে ছড়িয়ে পড়ে ও সরকারি প্রশাসনে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। ১৯৪৭ সালের ২০ই ফেব্রুয়ারি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী অ্যাটলি ঘোষণা করেন যে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসের মধ্যে ইংরেজ ভারত ত্যাগ করবে এবং ওই সময়ের মধ্যে ক্ষমতা হস্তান্তরের সমস্ত ব্যবস্থা করা হবে। এই ঘোষণার পর ভারতের সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। এই পরিস্থিতিতে ১৯৪৭ সালের মার্চ মাসে লর্ড মাউন্টব্যাটেন ভারতের বড়লাট হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি ভারতের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য একটি পরিকল্পনা করেন যেটি মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনা নামে পরিচিত।

Ø মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনা কি

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে ওঠে। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ নেতাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনার পর মাউন্টব্যাটেন তার ভারত বিভাগ সংক্রান্ত পরিকল্পনা প্রস্তাবিত করেন। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ৩রা জুন মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনা ঘোষিত হয়।

·      মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনার যে সমস্ত উল্লেখযোগ্য দিক বর্তমান সেগুলি হল –

i) ভারতের মুসলিম প্রধান অঞ্চলগুলির জনগণ একটি স্বাধীন ও স্বতন্ত্র রাষ্ট্র গঠন করতে পারবে। এর জন্য পৃথক গণপরিষদ গঠিত হবে।

ii) দেশ বিভক্ত হলে বাংলা ও পাঞ্জাব প্রদেশ দুটি ধর্মের ভিত্তিতে বিভক্ত হবে।

iii) উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের ভবিষ্যৎ গণভোটের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে।

iv) বিভক্ত করা বাংলা ও পাঞ্জাবের সীমানা নির্ধারণের জন্য একটি কমিশন গঠিত হবে।

Ø মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনার বাস্তবায়ন

১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসের অনুষ্ঠিত নিখিল ভারত কংগ্রেস কমিটি মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনা সমর্থন করেন। কংগ্রেস ভারতীয় জনগণের শান্তি ও সমৃদ্ধির স্বার্থে ভারত বিভাগের সিদ্ধান্ত মেনে নেন।

কংগ্রেস নেতৃবৃন্দের মধ্যে সরদার বল্লভ ভাই প্যাটেল ও নেহেরু ভারত বিভাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। এই সিদ্ধান্ত গ্রহনের পশ্চাতে ১৯৪৬ সালের শেষ দিকে অন্তর্ভুক্তি সরকারের কার্যকলাপের অচলাবস্থা সৃষ্টি এবং মুসলিম লীগের সঙ্গে একসঙ্গে সরকার পরিচালনা করা সম্ভব নয়, এই কারণ দুটিকে দায়ী করা হয়।

Ø উপসংহার

পরিশেষে বলা যায়, নানা প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যে 1947 সালের 15 আগস্ট ভারতবর্ষ স্বাধীনতা লাভ করলেও অখন্ড ভারতের স্বাধীনতার প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। ফলে মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনার মাধ্যমে ভারতের দুটি অংশ আলাদা হয়ে যায়।


জ্ঞ্যানজ্যোতি কোচিং সেন্টার

তোমাদের উজ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলব আমরা, এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি

অনলাইনে কোচিং নিতে হলে এবং বিভিন্ন নোট নিতে হলে এই নাম্বারে কল করুন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
bookstore