প্রশ্ন- সুলতানি যুগের ইতিহাসের উপাদানরূপে মুদ্রার গুরুত্ব আলোচনা করো।
উত্তরঃ সুলতানি যুগের ইতিহাস রচনার উপাদানগুলিকে সাধারণত চারভাগে ভাগ করা হয়, যথা-১। সরকারি দলিলপত্র, ২। ঐতিহাসিক সাহিত্য, ৩। বিদেশি পর্যটক ও বণিকদের বৃত্তান্ত এবং ৪। মুদ্রা ও শিল্প নিদর্শন।
মুদ্রার গুরুত্ব-
ইতিহাস রচনার উপাদানরূপে মুদ্রার গুরুত্ব অনস্বীকার্য। ঐতিহাসিক স্ট্যানলি লেনপুল মনে করেন যে মধ্যযুগের সুলতানদের সঠিক ইতিহাস ধরা পড়েছে তাঁদের মুদ্রায়। ব্যাখ্যা করে বলা যায় যে-
- রাজত্বকাল ও রাজ্যসীমা-
মুদ্রার সাহায্যে সুলতানের রাজত্বকাল ও তাঁদের রাজ্যসীমা নির্ধারণ, প্রতিবেশি রাজ্যসমূহের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন ছিল তা অনুমান করা যায়। তাই মুদ্রা প্রবর্তনের সমসাময়িক কাল থেকেই মুদ্রা হয়ে ওঠে অপ্রতিদ্বন্দ্বী ঐতিহাসিক উপাদান।
- ইতিহাসের তথ্য যাচাই-
মধ্যযুগের ইতিহাসের লিখিত উপাদানের স্বল্পতার পরিপ্রেক্ষিতে মুদ্রা থেকে প্রাপ্ত তথ্য দ্বারা লিখিত উপাদানের সত্যাসত্য যাচাই করা সম্ভব। তাই মধ্যযুগের ইতিহাস রচনার একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হলো মুদ্রা।
- অর্থনৈতিক অবস্থার ব্যাখ্যা-
মধ্যযুগের অর্থনৈতিক ইতিহাসের ব্যাখ্যায় মুদ্রাগুলির বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। ঐতিহাসিক রামশরণ শর্মা দেখিয়েছেন আদি-মধ্যযুগে মুদ্রা ব্যবস্থার অবনমন ঘটেছিল। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও অবনতি পরিলক্ষিত হয়েছিল। কিন্তু সুলতানি যুগে প্রবর্তিত স্বর্ণ, রৌপ্য ও তাম্রমুদ্রা অর্থনৈতিক উন্নতির সাক্ষ্য দেয়।
- ধর্মীয় বিশ্বাস-
মুদ্রা থেকে শিল্প কর্ম ও মুদ্রা শিল্পীদের কৃতিত্বের পরিচয় পাওয়া যায়। সুলতান বা রাজার আরাধ্য দেবদেবীর প্রতিকৃতি মুদ্রায় মুদ্রিত হতো। এ থেকে সুলতান ও রাজাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের কথা জানা যায়। এছাড়া সুলতান ও রাজাদের প্রতিকৃতি পরম্পরা গড়ে উঠেছিল।
- উপসংহার-
উপরোক্ত আলোচনা থেকে দেখা যায় যে, মধ্যযুগের ইতিহাসের অন্যতম উপাদান হলো মুদ্রা। মধ্যযুগের দিল্লি সুলতানিসহ আঞ্চলিক রাজ্যগুলির অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ইতিহাস চর্চার মূল ঐতিহাসিক উপাদান হলো মুদ্রা। এই উপাদানগুলি থেকে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাস জানাও সম্ভব।
জ্ঞ্যানজ্যোতি কোচিং সেন্টার
তোমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলব আমরা, এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি
6295916282; 7076398606
জ্ঞ্যানজ্যোতি কোচিং সেন্টার
তোমাদের উজ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলব আমরা, এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি
অনলাইনে কোচিং নিতে হলে এবং বিভিন্ন নোট নিতে হলে এই নাম্বারে কল করুন।