উত্তরঃ
দারিদ্র্যের সংজ্ঞা-
Professor Ram Ahuja-র মতে, 'একজনের যা আছে' এবং 'একজনের যা থাকা উচিত'-এই দুইয়ের মধ্যেকার পার্থক্যের অনুভূতি যে অবস্থা সৃষ্টি করে তাই হল দারিদ্র্য।
Gillin and Gillin-এর মতে, যাদের জীবনযাত্রার মান তাদের সমাজে নির্ধারিত জীবনযাত্রার মানের চেয়ে কম, তারাই দরিদ্র। সেই কারণে তারা সমাজজীবনে মানসিক ও দৈহিক কর্মদক্ষতা অর্জনে অক্ষম।
Michael Harrington-এর মতে, খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা প্রভৃতির ন্যূনতম মান থেকে যারা বঞ্চিত তারাই দরিদ্র ।
সুতরাং, উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা বলতে পারি যে, দারিদ্র্য হল একটি বহুমাত্রিক ধারণা। দারিদ্র্য সামাজিক বঞ্চনা বা অসাম্যের একটি রূপ। যে সামাজিক পরিস্থিতিতে মানুষ তার মৌলিক চাহিদাগুলি মেটাতে ব্যর্থ হয় সেই পরিস্থিতির নাম হল দারিদ্র্য। দারিদ্র্য থেকে অন্যান্য সামাজিক সমস্যা সৃষ্টি হয়। দেশের জাতীয় উন্নয়নও ব্যাহত হয়।
দারিদ্র্যের কারণসমূহ-
ভারতবর্ষে দারিদ্র্যের কারণগুলি নিম্নরূপ-
১। নিরক্ষরতা-
ভারতবর্ষের দারিদ্র্যের কারণগুলির মধ্যে অন্যতম হল নিরক্ষরতা। নিরক্ষরতা দেশের উন্নতি ও প্রগতির প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করে। 2011 সালের জনগণনার তথ্য অনুসারে ভারতবর্ষের সাক্ষরতার হার হল 74.4 শতাংশ। নিরক্ষর ব্যক্তিরা দক্ষতার অভাবে উৎপাদনমূলক কাজে অবদান কম রাখে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর যুগে কর্মজগতে নানাবিধ কলাকৌশল আয়ত্ত্ব করতে শিক্ষার দরকার। নিরক্ষতা বরং দারিদ্র্যকে ত্বরান্বিত করে।
২। কর্মসংস্থানের অভাব-
জনগণের মধ্যে শিক্ষার মান বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কর্মসংস্থানের অপ্রতুলতার কারণেই বেকারত্ব বাড়ছে। শ্রমশক্তির বিকাশের তুলনায় ভারতে কর্মসংস্থানের সুযোগ অনেক কম। যথাযথ কর্মসংস্থানের অভাবে দারিদ্র্য বৃদ্ধি পায়।
৩। জনবিস্ফোরণ-
ভারতবর্ষের দারিদ্র্যের মূল কারণ হিসেবে জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধিকে চিহ্নিত করা হয়। 2011 সালের Census Report অনুযায়ী ভারতবর্ষের জনসংখ্যা এখন 121 কোটি ছাড়িয়ে গেছে। এই বিপুল সংখ্যক জনগণের জন্য কর্মসংস্থান, শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্যব্যবস্থা, যোগাযোগ পরিষেবা প্রদান করা রাষ্ট্রের পক্ষে খুবই চাপের বিষয়। ফলে ভারতে অনেকেই মৌলিক চাহিদাগুলি থেকে বঞ্চিত হয়।
৪। স্বাস্থ্য ও পুষ্টির অভাব-
শ্রমিক-কৃষক, মিস্ত্রী, শিল্পীদের সুস্বাস্থ্য ও পুষ্টির অভাব থাকার কারণে তারা উৎপাদন ক্ষেত্রে কম অবদান রাখে। ভারতে রোগব্যাধি ও অপুষ্টিতে ভুগছে এরকম জনসংখ্যা বেশি আছে দরিদ্র শ্রেণির মধ্যে।
৫। প্রাকৃতিক দুর্যোগ-
প্রায় প্রতি বছর খরা, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্প ইত্যাদি প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে ব্যাপকভাবে কৃষিজ ফসলের ও বাড়িঘরের ক্ষয়ক্ষতি হয়। ফলে ভারতীয় অর্থনীতিতে বিশেষ করে দরিদ্র মানুষের অপূরণীয় ক্ষতি হয়।
জ্ঞ্যানজ্যোতি কোচিং সেন্টার
তোমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলব আমরা, এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি
6295916282; 7076398606
জ্ঞ্যানজ্যোতি কোচিং সেন্টার
তোমাদের উজ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলব আমরা, এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি
অনলাইনে কোচিং নিতে হলে এবং বিভিন্ন নোট নিতে হলে এই নাম্বারে কল করুন।