উত্তরঃ
দারিদ্র্যের সংজ্ঞা-
Professor Ram Ahuja-র মতে, 'একজনের যা আছে' এবং 'একজনের যা থাকা উচিত'-এই দুইয়ের মধ্যেকার পার্থক্যের অনুভূতি যে অবস্থা সৃষ্টি করে তাই হল দারিদ্র্য।
Gillin and Gillin-এর মতে, যাদের জীবনযাত্রার মান তাদের সমাজে নির্ধারিত জীবনযাত্রার মানের চেয়ে কম, তারাই দরিদ্র। সেই কারণে তারা সমাজজীবনে মানসিক ও দৈহিক কর্মদক্ষতা অর্জনে অক্ষম ।
Michael Harrington-এর মতে, খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা প্রভৃতির ন্যূনতম মান থেকে যারা বঞ্চিত তারাই দরিদ্র ।
সুতরাং, উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা বলতে পারি যে, দারিদ্র্য হল একটি বহুমাত্রিক ধারণা। দারিদ্র্য সামাজিক বঞ্চনা বা অসাম্যের একটি রূপ। যে সামাজিক পরিস্থিতিতে মানুষ তার মৌলিক চাহিদাগুলি মেটাতে ব্যর্থ হয় সেই পরিস্থিতির নাম হল দারিদ্র্য। দারিদ্র্য থেকে অন্যান্য সামাজিক সমস্যা সৃষ্টি হয়। দেশের জাতীয় উন্নয়নও ব্যাহত হয়।
দারিদ্র্য দূরীকরণে শিক্ষার ভূমিকা-
দারিদ্র্য দূরীকরণে শিক্ষা নিম্নলিখিত উপায়ে সাহায্য করে থাকে-
1. বর্তমানে শিক্ষা অনেকক্ষেত্রে কর্মসংস্থান উপযোগী নয়। যুগোপযোগী কর্মসংস্থানের সঙ্গে মিল রেখে পাঠক্রমে আমূল পরিবর্তন আনা দরকার। শিক্ষার মাধ্যমিক ও উচ্চস্তরের বহুমুখী পাঠক্রমের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
2. শিক্ষার বিভিন্ন স্তরে সাধারণ বিষয়বস্তু পঠনের সঙ্গে সঙ্গে বৃত্তিমূলক পাঠক্রম চর্চার সুযোগ রাখতে হবে। এককথায় শিক্ষায় বৃত্তিমুখীকরণে গুরুত্ব আরোপ করা উচিত। ফলে শিক্ষান্তে শিক্ষার্থীরা স্ব-নির্ভর কর্মস্থানে যুক্ত হওয়ার সুযোগ বৃদ্ধি পায়।
3. উচ্চশিক্ষায় কৃষিকার্যমূলক গবেষণার মান বৃদ্ধি করার মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন যেমন বাড়বে তেমন কৃষকশ্রেণি কম পরিশ্রমে ও কম ব্যয়ে আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত কলাকৌশল ও যন্ত্র ব্যবহার করতে সক্ষম হবে।
4. ভারতের দরিদ্রতার অন্যতম কারণ হল নিরক্ষরতা। একমাত্র শিক্ষার অধিকার আইনের সার্থক প্রয়োগের মাধ্যমে সকল শিশুকে শিক্ষার আঙিনায় নিয়ে আসা সম্ভব। শিক্ষায় লিঙ্গ বৈষম্য কমিয়ে নারী ক্ষমতায়নের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। তবেই সকলের মানবসম্পদের ব্যবহারের সুযোগ বাড়বে।
5. শিক্ষার সমসুযোগের নীতি অবলম্বন ও তার সঠিক প্রয়োগ দরকার। বিশেষ করে SC, ST, OBC এবং আর্থিকভাবে পশ্চাৎধর্মী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে।
6. প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষাস্তর পর্যন্ত দরিদ্র পরিবারের ছাত্রছাত্রীদের জন্য জাতীয় স্তরে বা রাজ্য সরকারের উদ্যোগে নানাবিধ আর্থিক সাহায্য দান ও তাদের সাফল্যের নিরিখে Scholarship-এর প্রদানের হার বৃদ্ধি করতে হবে।
7. নির্দিষ্ট কোর্স সমাপ্তির পর শিক্ষার্থীর যোগ্যতা অনুযায়ী কর্ম বা চাকুরি পাওয়ার পথ নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে সরকারি বা বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগ থাকবে।
৪. শিক্ষার্থীরদের মধ্যে কর্মের প্রতি মর্যাদা এবং শ্রমিক বা চাকুরি- জীবীদের মধ্যে সুস্থ কর্মসংস্কৃতি জাগ্রত করতে হবে।
9. শিক্ষায় বেরকারিকরণ, উদারীকরণ ও Brain drain কমাতে হবে।
10. আর্থসামাজিক অবস্থা অনুযায়ী ভারতীয় নাগরিক হিসেবে কোনো-কোনো সরকারি জনকল্যাণমুখী প্রকল্প তাদের জন্য বরাদ্দ সেই সম্পর্কে জ্ঞান শিক্ষার মাধ্যমে পরিবেশন করা দরকার। নিরক্ষরতা, অজ্ঞতা বা অসচেতনতার কারণে অনেকেই বঞ্চিত হয়। এক্ষেত্রে শিক্ষার Non-formal agency-গুলির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়া দরকার।
জ্ঞ্যানজ্যোতি কোচিং সেন্টার
তোমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলব আমরা, এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি
6295916282; 7076398606
জ্ঞ্যানজ্যোতি কোচিং সেন্টার
তোমাদের উজ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলব আমরা, এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি
অনলাইনে কোচিং নিতে হলে এবং বিভিন্ন নোট নিতে হলে এই নাম্বারে কল করুন।