প্রশ্নঃ গৌড়ের ওপর একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো। (Write a short note on Gour.)

Nil's Niva
0


প্রশ্নঃ গৌড়ের ওপর একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো।

(Write a short note on Gour.)


উত্তরঃ পাণিনির 'অষ্টাধ্যায়ী'তে গৌড়ের উল্লেখ আছে একটি প্রাচীনতম নগরী হিসেবে, যা 'গৌড়পুর' নামে পরিচিত। কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে গৌড়ের উৎপন্ন দ্রব্যের কথা উল্লেখ ৭ আছে। যেমন-'গুড়'। ধারণা করা হয় গুড় উৎপাদনের কেন্দ্র বলে গৌড় নগর ও দেশের নামের উদ্ভব হয়। আর হয়তো এই গৌড়নগরকে ঘিরেই পরে গৌড় জনপদ গড়ে উঠেছিল। গৌড় নামটি সুপ্রাচীন হলেও এর অবস্থিতি সম্পর্কে সঠিক ধারণা করা কষ্টসাধ্য। বাংলার প্রাচীন জনপদগুলি যে যুগে যুগে সীমানা সম্প্রসারণ করেছে তার বড়ো উদাহরণ হল গৌড়। এই জনপদের খ্যাতি এতই বৃদ্ধি পেয়েছিল যে সমগ্র বাংলাকেই সময়ে সময়ে গৌড়দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হত। পূর্ব ভারতীয় দেশসমূহের সামগ্রিক নাম হিসেবে, এমনকি উত্তর ভারতের আর্যাবর্তের নাম হিসেবেও কখনো-কখনো গৌড়ের ব্যবহার দেখা যায়। সেনবংশীয় রাজারা 'গৌড়েশ্বর' উপাধি গ্রহণ করে গৌরববোধ করতেন। বাৎস্যায়নের 'কামসূত্র'তেও গৌড় একটি পরিচিত দেশ। ব্যাপক অর্থে গৌড় বলতে অনেক সময় বাংলা ভাষাভাষী সমগ্র অঞ্চলকে বোঝাত। আদি গৌড়ের রাজনীতিক ক্ষমতার সম্প্রসারণের ফলে এর সীমানা বৃদ্ধি পেত।

আদিকালে গৌড় বলতে বর্তমানের মুরশিদাবাদ জেলা ও মালদা জেলার দক্ষিণাংশকে বোঝাত। হিউয়েন সাং শশাঙ্ককে কর্ণসুবর্ণ দেশের সম্রাট বলেছেন এবং 'হর্ষচরিত' গ্রন্থে শশাঙ্ককে 'গৌড়াধিপতি' বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে কর্ণসুবর্ণ দেশ ও গৌড়দেশ অভিন্ন। গৌড়ের রাজধানী শহর ছিল 'কর্ণসুবর্ণ'। মধ্যযুগের খ্যাতিমান মুসলিম পণ্ডিত অল বিরুনির বিবরণ অনুযায়ী পূর্ব ভারতের বিভিন্ন দেশের অর্থাৎ বর্তমান বাংলা, ওড়িশা, অসমের আদি মধ্যযুগীয় লিপির প্রকৃত রূপ হল এই 'গৌড়ীয় লিপি'।

ত্রয়োদশ-চতুদর্শ শতাব্দীর জৈন লেখকদের বিবরণ অনুযায়ী মালদা জেলায় অবস্থিত লক্ষণাবতী গৌড়ের অন্তর্গত ছিল। বাৎস্যায়নের কামসূত্রের টীকাকার বলেছেন, গৌড় দক্ষিণে কলিঙ্গ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। মধ্যযুগের শক্তিসংগম তন্ত্রে ইঙ্গিত করা হয়েছে, গৌড় বিস্তৃত ছিল বঙ্গ থেকে ভুবনেশ্বর (ওড়িশা) পর্যন্ত। কলহনের 'রাজতরঙ্গিনীতে' পঞ্চগৌড়ের উল্লেখ পাওয়া যায়। স্কন্দপুরাণের সাক্ষ্য অনুসারে পঞ্চগৌড় বলতে বোঝায় গৌড়, সারস্বত, কাম্বকুজ, মিথিলা এবং উৎকল। অনুমান করা যেতে পারে, ধর্মপালের গৌড় সাম্রাজ্যের স্মৃতি পঞ্চগৌড়ের ধারণায় প্রতিফলিত হয়েছে।

মুসলমান শাসনের সূত্রপাতে মালদা জেলার লক্ষণাবতী নগরীকে গৌড় নামে অভিহিত করা হয়। সম্ভবত এই গৌড়কে ভবিষ্য পুরাণ ও ত্রিকাগুশেষ প্রভৃতি পরবর্তীকালের গ্রন্থাদিতে পুন্ড্রের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

 

জ্ঞ্যানজ্যোতিকোচিংসেন্টার

তোমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ তৈরি করবো আমরা, এটাইআমাদেরপ্রতিশ্রুতি

6295916282; 7076398606

জ্ঞ্যানজ্যোতি কোচিং সেন্টার

তোমাদের উজ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলব আমরা, এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি

অনলাইনে কোচিং নিতে হলে এবং বিভিন্ন নোট নিতে হলে এই নাম্বারে কল করুন।

Tags

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
bookstore