Q.Explain the genesis and contribution of Arya-Samaj Movement.
***************************************
পাশ্চাত্য শিক্ষা ও আদর্শের
প্রভাবে যখন একদিকে ব্রাহ্ম সমাজ ও প্রার্থনা সমাজের মতো যুক্তিবাদী ও প্রগতিশীল সংস্কার
আন্দোলন শুরু হয় তখন আরেক দিকে স্বামী দয়ানন্দের নেতৃত্বে সম্পূর্ণ বৈদিক আদর্শে
সনাতন হিন্দুধর্ম ও সমাজ রক্ষার আন্দোলন গড়ে ওঠে। দয়ানন্দের এই সংস্কার আন্দোলনের
বৈশিষ্ট্য হল এটি সম্পূর্ণ পাশ্চাত্য প্রভাব মুক্ত ভারতীয় আন্দোলন যা সাধারণ ভারতীয়দের
আকৃষ্ট করেছিল। হিন্দু ধর্মকে স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠার পুনরুজ্জীবনবাদী আন্দোলন হল আর্যসমাজ
আন্দোলন।
স্বামী দয়ানন্দ ১৮২৪ খ্রিস্টাব্দে
গুজরাটের কাথিয়াওয়াড়ের অন্তর্গত মোরভি শহরে এক গোঁড়া ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ
করেন। দয়ানন্দ সারা জীবনে কখনো কোনো পাশ্চাত্য শিক্ষা গ্রহণ করেন নি। মাত্র পনেরো
বছর বয়সে গৃহত্যাগ করে সন্ন্যাস জীবন নেন এবং কঠোর যোগ সাধনায় রত হন। তিনি স্বামী
বিরজানন্দের কাছে শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন এবং তার কাছেই বৈদিক ধর্মশাস্ত্রের পাঠ নেন।
সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে তিনি অগাধ পাণ্ডিত্য অর্জন করেন।
দয়ানন্দ বিশ্বাস করতেন বেদে যে ধর্ম বিধৃত আছে সেটাই
প্রকৃত হিন্দু ধর্ম, আর পৌরাণিক হিন্দুধর্ম বিশেষ করে মূর্তিপূজা ছিল কুসংস্কার মাত্র। তিনি বেদকে অপৌরষেয় ও অভ্রান্ত
মনে করতেন। অর্থাৎ বেদ ছিল তাঁর কাছে ঈশ্বরের মুখ নিঃসৃত বাণী এবং সকল মানব-জ্ঞানের
আধার। তাই তাঁর লক্ষ্য হল কুসংস্কারাচ্ছন্ন পৌরাণিক ধর্মকে অপসারিত করে বিশুদ্ধ বেদ-ভিত্তিক
হিন্দু ধর্মের পুনঃপ্রতিষ্ঠা। এই উদ্দেশ্যে তিনি ভারতের বিভিন্ন স্থানে পরিভ্রমণ করেন।
১৮৬৯ সালে দয়ানন্দ কলকাতায় অনুষ্ঠিত ব্রাহ্ম সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন এবং ব্রাহ্ম
নেতা কেশবচন্দ্র সেনের সংস্পর্শে আসেন। কেশবচন্দ্র তাঁকে হিন্দিতে তাঁর আদর্শ প্রচার
করতে বলেন যাতে সাধারণ জনগণের মধ্যে তাঁর আদর্শ ছড়িয়ে পড়ে। কেশবচন্দ্রের এই পরামর্শ
দয়ানন্দের খুব কাজে এসেছিল। আমেদাবাদে তিনি প্রার্থনা সমাজের আদর্শের সঙ্গে পরিচিত
হন। কিন্তু ব্রাহ্ম সমাজ বা প্রার্থনা সমাজ কোনটাই তাঁকে প্রভাবিত করতে পারেনি, কারণ
তাঁর লক্ষ্য ছিল বেদ-ভিত্তিক সমাজ গঠন।
১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দের ১০ই এপ্রিল বোম্বাই শহরে তিনি
আর্য সমাজ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৭৭ খ্রিস্টাব্দে লাহোরে আর্যসমাজের গঠনতন্ত্র ও ধর্মীয়
নীতি চূড়ান্ত করা হয়। এরপর দয়ানন্দ তাঁর জীবনের বাকি দিনগুলি ভারতের বিভিন্ন স্থানে
তাঁর ধর্মীয় মতাদর্শ প্রচার করেন এবং আর্যসমাজের শাখা স্থাপন করেন। দয়ানন্দ ও তাঁর
অনুগামীরা আর্যসমাজ আন্দোলনকে পাঞ্জাব, রাজস্থান যুক্তপ্রদেশ (বর্তমান উত্তরপ্রদেশ)
প্রভৃতি স্থানে ছড়িয়ে দেন। ১৮৮২ সালে তিনি 'গৌরক্ষিণী সভা স্থাপন করেন। ১৮৮৩ সালে
আজমীড়ে তাঁর জীবনাবসান হয়।
স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতীর
মৃত্যুর পর তাঁর অনুগামী লালা হংসরাজ, পণ্ডিত গুরু দত্ত, লালা লাজপৎ রায়, স্বামী শ্রদ্ধানন্দ
আর্য সমাজ আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যান। দয়ানন্দের ধর্মীয় ও সামাজিক চিন্তাধারা ও
মতাদর্শের আধার হল তাঁর গ্রন্থ 'সত্যর্থ প্রকাশ'। হিন্দি ভাষায় রচিত এই গ্রন্থে দয়ানন্দ
বেদ ভিত্তিক সমাজের কথা বলেছেন। তাঁর মতে বেদ-ই হল হিন্দু ধর্মের আধার, উপনিষদ বা পুরাণ
নয়। তিনি বৈদিক ধর্ম ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিলেন। তাঁর মতে বৈদিক ঋষিরা প্রকৃতির মধ্যেই
ঈশ্বরকে দেখেছেন। এই নিরাকার ঈশ্বরই হিন্দুদের আরাধ্য। তিনি ঈশ্বর, জীবাত্মা ও প্রকৃতি
এই তিন তত্ত্বে বিশ্বাস স্থাপন করেন। কর্মবাদ ও জন্মান্তরবাদে তাঁর বিশ্বাস ছিল।
আর্যসমাজের সদস্যরা বর্ণপ্রথা মানলেও তারা জাতিভেদের
বিরোধী ছিলেন। ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে স্বামী দয়ানন্দের মৃত্যুর পর তাঁর অনুগামী লালা হংসরাজ,
পন্ডিত গুরু দত্ত, জাতীয়তাবাদী নেতা লালা লাজপৎ রায়, স্বামী শ্রদ্ধানন্দ প্রমুখ আর্য
সমাজ আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যান। ১৮৯২ খ্রিস্টাব্দে মাংসাহার ও শিক্ষানীতি এই দুই
প্রশ্নকে কেন্দ্র করে আর্যসমাজ দুভাগে ভাগ হয়ে যায়। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদের ফলে
আর্যসমাজের সংস্কার আন্দোলনে ভাঁটা পড়ে। ক্রমে এই আন্দোলন এর ধর্মীয় ও সামাজিক চরিত্র
হারিয়ে ফেলে রাজনৈতিক আন্দোলনের রূপ নেয়। লালা লাজপৎ রায়ের মতো চরমপন্থী নেতারা
আর্যসমাজের নেতৃত্ব দেন। আর্য সমাজ থেকেই লালা লাজপৎ রায়, লালা হরদয়াল ও ভাই পরমানন্দের
মতো বিপ্লবীর আবির্ভাব ঘটেছিল। আর্য সমাজ আন্দোলন কিছুটা হলেও উগ্র সাম্প্রদায়িকতার
জন্ম দিয়েছিল। গৌরক্ষিণী সভা ও শুদ্ধি আন্দোলন সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের জন্ম দিয়েছিল।
এসব সীমাবদ্ধতা সত্বেও আর্যসমাজ আন্দোলন যে হিন্দু পুনরুজ্জীবনবাদের জন্ম দিয়েছিল
এবং যে সামাজিক সংস্কার পরিকল্পনা গ্রহন করেছিল তার প্রভাব সাধারণ ভারতবাসীর মধ্যে
পড়ে। ভারতীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বিকাশে আর্যসমাজের অবদানকে তাই খাটো করা যায় না।
জ্ঞ্যানজ্যোতি কোচিং সেন্টার
তোমাদের উজ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলব আমরা, এটাই
আমাদের প্রতিশ্রুতি
6295916282;
7076398606
মাসে ২০টাকা বেতনে পড়াশুনা করতে অবশ্যই যোগাযোগ করো আমাদের সঙ্গে।
জ্ঞ্যানজ্যোতি কোচিং সেন্টার
তোমাদের উজ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলব আমরা, এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি
অনলাইনে কোচিং নিতে হলে এবং বিভিন্ন নোট নিতে হলে এই নাম্বারে কল করুন।