বন্যা
-সতীনাথ
ভাদুড়ী
বন্যা
গল্পের মূল পটভূমি বিহারের বিখ্যাত কুশি নদীর তীরে একটি প্রান্তিক গ্রাম রহিকপুরা।
রহিকপুরা গ্রামের মানুষদের বন্যায় বিপর্যস্ত অবস্থা হয়। “কুশি নদীতে বান আসিয়াছে;
একরকম নোটিশ না দিয়াই”।... বন্যা আসার কারণ হিসেবে এখানকার মানুষরা মনে করে কোন পাপে
ভগবান তাদের এই শাস্তি দিতেছেন। এই গ্রামের মেয়েরা শেষ রাতে ওঠে। তারা কেউ আঙ্গিনার
বাইরে যেতে পারে না। এবং আঙিনাতে নামতে পারে না। চারিদিকে শুধু জল। হঠাৎ উপস্থিত হওয়া
বন্যাতে দিশেহারা এই গ্রামের মানুষগুলো চেষ্টা করে নিজেদের যেটুকু সহায়-সম্বল আছে
সেটুকু নিয়ে বাঁচতে। দিশেহারা এই মানুষগুলো নিজেদের সংসারের জিনিসপত্র বাঁচাতে বিপর্যয়ের
মধ্যেও প্রাণান্ত চেষ্টা করে। বন্যার মতো ভয়ঙ্কর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ তাদের জীবনকে
তছনছ করে দেয়। এই বন্যার ফলে এই গ্রামের ভিন্ন ভিন্ন জাতি সম্প্রদায়ের মানুষের আচার-আচরণ,
রীতিনীতি সংস্কার এবং সর্বোপরি তাদের সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদের কথা উঠে আসে। বন্যা পরিস্থিতির
মতই রহিকপুরা গ্রামের শ্রেণির সংঘাতকে তুলে ধরেছেন লেখক। ব্রাহ্মণ, তিয়র, ধাত্তর,
বাঁতার প্রভৃতি জনজাতির মানুষের বসবাস রহিকপুরা গ্রামে। এদের প্রত্যেকের চালচলন মুখের
ভাষা এবং জাতিগত বৈশিষ্ট্যের কথা আমরা জানতে পারি এই বন্যার কারণে।
গ্রামের
সবচেয়ে অবস্থাপন্ন দুটি পরিবার হল সুশৃৎ তিন্নর যে তিয়র সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব
করে, আর নৌখে ঝা যে ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করে। এদের মধ্যে বন্যার পূর্বে
মিল ছিল না। ব্রাহ্মণরা নিজেদেরকে উচ্চশ্রেণির বলে সকলের থেকে পৃথক মনোভাব পোষণ করে।
তিয়র রাও নিজেদেরকে কোন অংশে কম মনে করে না। এছাড়া আছে শীর্ষাবাদিয়া নিজেদেরকে মুর্শিদাবাদের
হাবসী খোঁজার বংশধর বলে বেশ বড়াই করে কেউ তাদেরকে 'বাধিয়া' বললে তারা বলে জিব টোনে
ছিঁড়ে ফেলবে। তবে অন্যান্য জনজাতি থাকলেও রহিকপুরা গ্রামের মূল লড়াই রেষারেষি ব্রাহ্মণ
আর তিনর সম্প্রদায়ের মধ্যে। গ্রামের দুই আস্থাবান সুমৃৎ তিয়র ও নৌখে বা এই দুই পরিবারের
মধ্যে রেষারেষি ঝগড়া ফৌজদারি নিত্য লেগেই ছিল। প্রথমে ছিল দুইজনের পিতাদের মধ্যে ব্যক্তিগত,
পরের দাঁড়ায় ব্রাহ্মণ এবং তিয়র দুই জাতির মধ্যে। তবে জাতপাতের দ্বন্দ্ব থাকলেও বিপদের
সময় রহিকপুরা গ্রামের সকলে একসঙ্গে মোকাবিলা করেছে। কুশী নদীতে বান এলে সকলে আপাত
হিংসা ঈর্ষা ভুলে সঙ্গবদ্ধ হয়ে বন্যার জলের সঙ্গে মোকাবিলা করে। উঁচু জাতির মহিলাদের
প্রতি সম্মান দেখিয়ে নিচু জাতের মহিলারা তাদের কাজে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়।
তিয়র গিন্নির ঝা আসন্ন প্রসবা পুত্রবধূর উদ্দেশ্যে বলে “ভয় কী? কৌশিকী মায়ের কৃপায়
সব ঠিক হয়ে যাবে।" একজন আসন্ন প্রসবা নারী এবং তার পরিবারের পাশে বিপদের মধ্যে
সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু গ্রামে জল নেমে গেলে আবার তারা পূর্বের অবস্থানে
ফিরে আসে। আবার হিংসা-বিদ্বেষ শুরু হয়ে যায়।
জ্ঞ্যানজ্যোতি কোচিং সেন্টার
তোমাদের উজ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলব আমরা, এটাই
আমাদের প্রতিশ্রুতি
6295916282;
7076398606
মাসে ২০টাকা বেতনে পড়াশুনা করতে অবশ্যই যোগাযোগ করো আমাদের সঙ্গে।
জ্ঞ্যানজ্যোতি কোচিং সেন্টার
তোমাদের উজ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলব আমরা, এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি
অনলাইনে কোচিং নিতে হলে এবং বিভিন্ন নোট নিতে হলে এই নাম্বারে কল করুন।