Q. Write a note on Triple Alliance.
*****************************************************
§ ত্রিশক্তি মৈত্রী (Triple Alliance ):
জার্মানির
চ্যান্সেলার বা প্রধানমন্ত্রী বিসমার্ক-কে 'ইউরোপীয় মৈত্রী-ব্যবস্থার প্রথম সফল উদগাতা'
বলা হয়। ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে সেডানের যুদ্ধে ফ্রান্সকে পরাজিত করে জার্মানি ঐক্যবদ্ধ
হয়। বিসমার্ক তাঁর উদ্দেশ্য সিদ্ধির জন্য ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দে জার্মানি, অস্ট্রিয়া
ও রাশিয়াকে নিয়ে গড়ে তোলেন ‘ড্রেইকাইজারবুন্ড' বা তিন সম্রাটের চুক্তি। তিন সম্রাটের
চুক্তি পরস্পর বিদ্বেষ-ভাবাপন্ন হওয়া সত্ত্বেও বিসমার্কের কূটকৌশলে অস্ট্রিয়া ও রাশিয়া
জোটবদ্ধ হয়। এই চুক্তি কোনও লিখিত চুক্তি বা দলিল নয়—এটি
ছিল তিন সম্রাটের মধ্যে বোঝাপড়া-মাত্র এই চুক্তি দীর্ঘস্থায়ী হয় নি, কারণ বলকান
অঞ্চলে অস্ট্রিয়া ও রাশিয়ার স্বার্থ ছিল পরস্পর-বিরোধী। এই সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে
বিসমার্ক বার্লিনে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলন আহ্বান করেন (১৮৭৮ খ্রিঃ), যা বার্লিন কংগ্রেস
নামে পরিচিত। বলকান সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে এখানে বার্লিন চুক্তি সম্পাদিত হয়
(১৮৭৮ খ্রিঃ)। বিসমার্ক 'সাধু দালাল'-এর ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও,
রাশিয়া তাঁর বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের অভিযোগ আনে এবং ত্রিশক্তি মৈত্রী থেকে সরে
দাঁড়ায়। এর ফলে এই চুক্তি অকেজো হয়ে পড়ে।
এই অবস্থায় জার্মানির
নিরাপত্তার স্বার্থে ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দের ৭ই অক্টোবর বিসমার্ক জার্মানি ও অস্ট্রিয়ার
মধ্যে দ্বিশক্তি চুক্তি গড়ে তোলেন। অস্ট্রিয়া মনে করেছিল যে, এই চুক্তির মাধ্যমে
সে বলকানে নিজ আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে পারবে। অপরদিকে বিসমার্ক মনে করেন যে, এই চুক্তির
ফলে ফ্রান্স মিত্রহীন হয়ে পড়বে। এই চুক্তি দ্বারা স্থির হয় যে, অস্ট্রিয়া যদি রাশিয়া
কর্তৃক আক্রান্ত হয়, তাহলে জার্মানি অস্ট্রিয়ার পক্ষে যোগ দেবে। অপরদিকে, জার্মানি
যদি ফ্রান্স কর্তৃক আক্রান্ত হয়, তাহলে অস্ট্রিয়া নিরপেক্ষ থাকবে। এই চুক্তির উদ্দেশ্য
ছিল স্পষ্টতই রাশিয়া ও ফ্রান্সকে প্রতিহত করা।
এতেও বিসমার্কের
ফরাসি-ভীতি কাটে নি। তিনি রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী ছিলেন। জার্মানির
সঙ্গে রাশিয়ার সরাসরি কোনও সংঘাত ছিল না। এছাড়া, রাশিয়াকে দূরে সরিয়ে রাখলে ফ্রান্সের
সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক স্থাপনের সম্ভাবনা থেকেই যায়। এ কারণে তিনি রাশিয়ার সঙ্গে
সম্পর্ক স্থাপনের প্রয়োজন বোধ করেন। ১৮৮১ খ্রিস্টাব্দের ১৮ই জুন জার্মানি, অস্ট্রিয়া
ও রাশিয়ার মধ্যে তিন সম্রাটের লিগ বা ‘ড্রেইকাইজারবুন্ডনিস' প্রতিষ্ঠিত হয়। স্থির
হয় যে, চতুর্থ কোনও শক্তির দ্বারা কেউ আক্রান্ত হলে অপর দুই মিত্র নিরপেক্ষ থাকবে।
মনে রাখা দরকার যে, এই নতুন চুক্তিটি এবং ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দে সম্পাদিত তিন সম্রাটের
চুক্তি হুবহু এক নয়। ১৮৮১ খ্রিস্টাব্দে তিন সম্রাটের লিগ ছিল একটি বন্ধুত্বের ঘোষণা-মাত্র।
১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে বুলগেরিয়া সংকটকে কেন্দ্র করে রাশিয়া ক্ষুব্ধ হয় এবং এই চুক্তিটি
ভেঙে যায়।
রাশিয়া ও অস্ট্রিয়ার
সঙ্গে মিত্রতা স্থাপনের পর বিসমার্ক ইতালিকে দলে টানতে সচেষ্ট হন, কিন্তু ইতালির সঙ্গে
অস্ট্রিয়ার স্বার্থ-সংঘাত থাকায় তা সম্ভব হচ্ছিল না। ইতিমধ্যে ফরাসি-ক্যাথলিকদের
রোম পুনরুদ্ধারের চেষ্টা এবং উত্তর আফ্রিকার টিউনিস দখলকে কেন্দ্র করে ফ্রান্স ও ইতালির
দ্বন্দ্বের সুযোগ নিয়ে বিসমার্ক ইতালিকে দলে টানেন। ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দের ২০শে মে ভিয়েনা
শহরে জার্মানি, অস্ট্রিয়া ও ইতালির মধ্যে ত্রিশক্তি মৈত্রী (Triple Alliance) সম্পাদিত
হয়।
জ্ঞ্যানজ্যোতি কোচিং সেন্টার
তোমাদের উজ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলব আমরা, এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি
অনলাইনে কোচিং নিতে হলে এবং বিভিন্ন নোট নিতে হলে এই নাম্বারে কল করুন।