Q. Discuss the role of ‘Zaibatsu’ in the economy of Japan.
§ জাইবাৎসু:
জাপানের
আর্থিক ও শিল্পক্ষেত্রে যে দ্রুত প্রসার ঘটেছিল তাতে জাইবাৎসুদের এক বিশেষ ইতিবাচক
ভূমিকা ছিল। প্রাচীনকাল থেকে জাপানে জাইবাৎসু শব্দটির প্রচলন ছিল। কিন্তু আধুনিক কালে
জাইবাৎসু এক বিশেষ অর্থ পরিগ্রহ করেছিল। অনেকে জাইবাৎসুকে পাশ্চাত্যের কার্টেল ও ট্রাস্টের
সঙ্গে তুলনা করে থাকেন। কিন্তু কার্টেল ও ট্রাস্টের সঙ্গে জাইবাৎসুর দুটি মৌলিক পার্থক্য
রয়েছে। (১) জাইবাৎসু সংস্থাগুলো সাধারণত একটি পরিবারকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠত। (২)
এই ধরনের এক একটি পারিবারিক সংস্থা একই সঙ্গে বিভিন্ন শিল্প গঠন ও পরিচালনা করত।
জাপানে জাইবাৎসু গোষ্ঠীতে
প্রায় ২০টি পরিবার ছিল। এদের মধ্যে মিৎসুই, মিৎসুবিশি, সুমিটামো এবং যোশুদা পরিবার
ছিল প্রধান। মেইজি রেস্টোরেশনের পর এই পরিবারগুলোর দ্রুত প্রসার ঘটেছিল। এদের মধ্যে
কতকগুলো যেমন মিৎসুই, সুমিতামো ইত্যাদি পরিবার বা গোষ্ঠীগুলো গঠিত হয়েছিল প্রাচীন
পরিবারের লোকেদের নিয়ে। অন্যদিকে মিৎসুবিশি, যোশুদা প্রভৃতি সংস্থাগুলো গঠিত হয়েছিল
কিছু নতুন পরিবারের উদ্যমে । এই সংস্থা বা গোষ্ঠীগুলোর দক্ষতা বজায় রাখার জন্য কতকগুলো
বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। কেবলমাত্র উত্তরাধিকার সূত্রে পুত্রেরা এইসব সংস্থার
কার্যকরী মালিক হতে পারত না। অযোগ্য পুত্রদের সরিয়ে দিয়ে অনেক সময় দক্ষ ও যোগ্য
তরুণদের পরিবারের কন্যাদের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে তাদের গোষ্ঠীর অন্তর্গত করা হত। এইভাবে
মিৎসুই গোষ্ঠী চিরদিনই মিৎসুই থাকত এবং কোনো সময়ই যোগ্যতার অভাবে সংস্থার পতনের সম্ভাবনা
থাকত না।
মেইজি রেস্টোরেশনের পর
প্রাচীন সামুরাই শ্রেণীর লোকেদের শিল্প ও বাণিজ্যে যোগদানের জন্য উৎসাহ দেওয়া হয়েছিল।
এঁরা আর্থিক ক্ষেত্রে নিয়ম শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনেছিলেন। তাঁদের দক্ষ নেতৃত্বে জাপানে
অর্থনৈতিক বনিয়াদ শক্তিশালী হয়েছিল। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে তাঁদের প্রবেশের ফলে রাজনৈতিক
ও অর্থনৈতিক নেতাদের মধ্যে এক ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ সৃষ্টি হয়েছিল। এসবের পরিণতিতে জাইবাৎসুর
বিভিন্ন গোষ্ঠীর হাতে আর্থিক ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হয়েছিল। মেইজি যুগের পরবর্তীকালে
জাইবাৎসুদের নেতৃত্বে জাপানে দ্রুত আর্থিক বিকাশ ঘটেছিল। এই সময় সরকারের সাথে জাইবাৎসুদের
সম্পর্ক বেশ নিবিড় বা ভালো ছিল। প্রথম দিকে বিভিন্ন শিল্পপতিরা রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি
অনুগত ছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে বিভিন্ন পরিবারের হাতে বিপুল অর্থ চলে এসেছিল। তারা
শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল। স্বাভাবিক কারণে তারা পরবর্তীকালে রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও প্রভাব
বিস্তার করেছিল।
জাইবাৎসু গোষ্ঠী সরকারের
কর্তৃত্বকে স্বীকার করে নিয়েছিল। সরকারের কাছ থেকে তারা বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পেয়েছিল।
তারাও সরকারকে বিভিন্নভাবে সাহায্য করেছিল। বিশেষ করে দ্রুত শিল্প বিকাশে ও কৃষির উন্নয়নে
জাইবাৎসুদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। জাপানের সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিকাঠামোতে জাইবাৎসুদের
নিয়ন্ত্রণ ছিল না। তবুও জাপানের অর্থনৈতিক জীবনে জাইবাৎসুরাই ছিল সমস্ত শক্তির কেন্দ্রবিন্দু
বা আধার।
১৯০০ সালের পূর্বেই জাইবাৎসু
গোষ্ঠী শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে শিল্পায়ন দ্রুত বেড়েছিল।
সে সময়ে জাইবাৎসুদের ক্ষমতা বেড়েছিল। তখন জাপানে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যে পরিবর্তন
এসেছিল তাতে জাইবাৎসুদের অবদান ছিল বিশেষভাবে স্মরণীয়। শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ
তারা সরবরাহ করেছিল। বিনিময়ে তারা সরকারের কাছ থেকে অনেক সুযোগ সুবিধা পেয়েছিল। তাদের
প্রভাব প্রতিপত্তি বিশেষভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল। জাপানের আর্থিক বিকাশে জাইবাৎসুদের গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা ছিল। দেশের বিপন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে তারা সাহায্য করেছিল। ব্যাংক, বিমা,
ট্রাস্ট ইত্যাদি প্রতিষ্ঠা করে জাইবাৎসু দেশের অর্থনীতির ওপরে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব
বিস্তার করেছিল। নিজেদের নিরাপত্তার জন্য তারা পরবর্তীকালে আর সরকারের প্রতি মুখাপেক্ষী
ছিল না। জাইবাৎসু গোষ্ঠী রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তাদের ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করার জন্য চেম্বার
অফ কমার্স গঠন করেছিল। এর মাধ্যমে তারা রপ্তানি শুল্ক ও দেশের সামরিক ব্যয় হ্রাসের
জন্য সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিল।
রাজনৈতিক সুযোগ সুবিধা
লাভের জন্য জাইবাৎসুর অন্তর্গত বিভিন্ন পরিবার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে সমর্থন ও আর্থিক
সাহায্য দিয়েছিল। মিৎসুই পরিবার সে-ইউ-কাই এবং মিৎসুবিশি পরিবার মিন-সেই-তো দলকে আর্থিক
সাহায্য দিয়েছিল। এর বিনিময়ে বা প্রতিদানে তারা ঐসব দলের কাছ থেকে নানাবিধ সুযোগ
সুবিধা লাভ করেছিল। এসবের পরিণতিতে জাপানের দলীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে দুর্নীতির ব্যাপক
অনুপ্রবেশ ঘটেছিল।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর জাইবাৎসু
গোষ্ঠী যুদ্ধনীতি ত্যাগ করে শান্তিপূর্ণভাবে আর্থিক অনুপ্রবেশের পথকে গ্রহণ বা অনুসরণ
করতে চেয়েছিল। ওয়াশিংটন সম্মেলনের পর বেশ কিছুকাল তাদের এই নীতি সাফল্যমণ্ডিত হয়েছিল।
জাপানে পুঁজিবাদের প্রসারে
বা বিকাশে জাইবাৎসুদের এক বিশেষ ভূমিকা ছিল। জাপানে এমন কোনো শিল্পক্ষেত্র ছিল না যেখানে
তাদের অর্থের বিনিয়োগ হয়নি। খনিজ সম্পদের উত্তোলন, ধাতু, যন্ত্রপাতি, বিদ্যুৎ, জাহাজ
নির্মাণ, আমদানি- রপ্তনি ব্যবসায়, বস্ত্র শিল্প, কাগজ, সিমেন্ট, কাঁচ, ব্যাংক, বিমা
সকল ক্ষেত্রেই তারা অর্থ বিনিয়োগ করেছিল।
জাপানের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক
ও সামাজিক জীবনের ওপর জাইবাৎসু গোষ্ঠীর প্রভাব ছিল অপরিসীম। জাইবাৎসু গোষ্ঠীর শক্তি
সুসংহত হওয়াতে জাপানে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর আবির্ভাবের পথে বাধার সৃষ্টি হয়েছিল। জাইবাৎসুদের
জন্য জাপানে পাশ্চাত্যের অনুকরণে সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা দৃঢ় ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত
হতে পারেনি। বরং জাইবাৎসুদের জন্যই জাপানে সমরবাদ স্ফীত হতে পেরেছিল। পৃথিবীর অন্য
কোনো দেশে জাইবাৎসুর সঙ্গে তুলনীয় কোনো সংগঠনের অস্তিত্ব ছিল না।
জ্ঞ্যানজ্যোতি
কোচিং সেন্টার-নিতিশ স্যার
তোমাদের
সাফল্য, আমাদের লক্ষ্য
6295916282;
7076398606
জ্ঞ্যানজ্যোতি কোচিং সেন্টার
তোমাদের উজ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলব আমরা, এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি
অনলাইনে কোচিং নিতে হলে এবং বিভিন্ন নোট নিতে হলে এই নাম্বারে কল করুন।