Q. Write a note on the Impact of the Turkish success in India.
§ ভারতে তুর্কী-বিজয়ের প্রভাব:
ভারতে তুর্কী-বিজয়ের ফলে এদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ও সুদূরপ্রসারী পরিবর্তনের সূচনা হয়েছিল।
প্রথমত,
হর্ষবর্ধনের মৃত্যুর পর উত্তর ভারতে যে রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতার বীজ রোপিত হয়েছিল, তুর্কীদের আগমনে তার অবসান ঘটে। একাদশ-দ্বাদশ শতকে অঞ্চলভিত্তিক এবং গোষ্ঠীনিয়ন্ত্রিত ছোট ছোট রাজ্য প্রতিষ্ঠা উত্তর ভারতীয় রাজনীতির প্রধান বৈশিষ্ট্যে পরিণত হয়েছিল।
দ্বিতীয়ত,
তুর্কীরা বিজয়ী হবার ফলে একাদশ-দ্বাদশ শতকের বিচ্ছিন্নতাবাদের অবসান ঘটে। রাজতান্ত্রিক আদর্শ হিসেবে তুর্কীরা শক্তিশালী কেন্দ্রীয় শাসন-প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়। ফলে সামন্ততান্ত্রিক বাবস্থার দুটি মূল উপাদান আঞ্চলিকতাবাদ ও বিচ্ছিন্নতাবাদ দ্রুত অপসারিত হয়।
তৃতীয়ত,
তুর্কী-বিজয়ের ফলে ভারতবর্ষ আবার কেন্দ্রীভূত শাসনব্যবস্থার স্বাদগ্রহণে সমর্থ হয়। দিল্লীকে কেন্দ্র করে তারা ভারতসাম্রাজ্য গঠনের ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করে। এদের উদ্যোগেই গড়ে ওঠে সর্বভারতীয় শাসনতান্ত্রিক ঐতিহ্য।
চতুর্থত,
খ্রীষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে প্রতিবাদী ধর্মসমূহের, বিশেষত বৌদ্ধধর্মের উত্থান ও প্রসারের ফলে ভারতবর্ষের সাথে এশিয়ার অন্যান্য দেশসমূহের মধ্যে যে যোগাযোগ গড়ে উঠেছিল, অষ্টম শতকে তা অন্তর্হিত হয়। ব্রাহ্মণ্যবাদের কর্তৃত্বের যুগে ভারতবর্ষ আবার বহির্জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। ভারতের সমাজ, সংস্কৃতি, ধর্ম—সবকিছুই আবদ্ধ হয়ে পড়েছিল তার ভৌগোলিক সীমার গণ্ডীতে। কিন্তু তুর্কীদের বিজয়-অভিযানের ফলে আবার ভারতবর্ষের সাথে বহির্ভারতের যোগসূত্র স্থাপিত হয়।
পঞ্চমত,
তুর্কীদের সাফল্য ভারতের প্রচলিত সমাজব্যবস্থার ক্ষেত্রে গভীরতর পরিবর্তনের সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। ইসলাম সংস্কৃতির প্রভাব
থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য হিন্দু-সমাজব্যবস্থার মধ্যে আরো কঠোরতর নিয়মবিধি প্রবর্তিত
হয়। অন্যদিকে উদারতাবাদী ভক্তি-আন্দোলনের মাধ্যমে সামাজিক সাম্য ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার
এক নতুন প্রয়াস শুরু হয়।
ষষ্ঠত, মুসলমান বিজয়ের ফলে ভারতের
সামরিক সংগঠন ও যুদ্ধরীতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসে। ইতিপূর্বে সামরিক কাজে একমাত্র
রাজপুত বা ক্ষত্রিয় ইত্যাদি উচ্চবর্ণের লোকদের একাধিপত্য ছিল। মধ্য-এশিয়ার যুদ্ধকৌশলে
শিক্ষিত এবং হাল্কা ও কার্যকরী অস্ত্রে সুসজ্জিত কেন্দ্রীয় বাহিনী পরবর্তীকালে সাম্রাজ্য
সম্প্রসারণে এবং নিরাপত্তাবিধানে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
সপ্তমত, তুর্কী শাসনে প্রাচীন বর্ণভিত্তিক
সমাজব্যবস্থার ভাঙনের অনিবার্য ফলস্বরূপ সর্বজনভিত্তিক শহরের অভ্যুত্থান ঘটে।
জ্ঞ্যানজ্যোতি কোচিং সেন্টার
তোমাদের উজ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলব আমরা, এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি
অনলাইনে কোচিং নিতে হলে এবং বিভিন্ন নোট নিতে হলে এই নাম্বারে কল করুন।