Analyse the causes of Sino-Japanese war?

Nil's Niva
0

 Q. Analyse the causes of Sino-Japanese war?

·     চীন-জাপান যুদ্ধের কারনঃ

                        কোরিয়ার প্রশ্নে দীর্ঘদিন ধরেই চীন ও জাপানের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ ছিল এবং অবশেষে এই প্রশ্নেই দুই দেশের মধ্যে প্রত্যক্ষ সংগ্রাম শুরু হয়েছিল। জাপান কতকগুলি কারণে চীনের সঙ্গে যুদ্ধ চেয়েছিল।

প্রথমত, কোরিয়াতে চীনের সমর্থনপুষ্ট রাশিয়ার দ্রুত অগ্রগতি জাপানকে শঙ্কিত করেছিল। ১৮৯১ সাল ট্রান্স-সাইবেরিয়ান রেলপথ নির্মাণ করার  ফলে রাশিয়ার সামরিক শক্তি বৃদ্ধি পেয়েছিল তা বলাই বাহুল্য। এই সময় রাশিয়া কোরিয়াকে বৈদেশিক আক্রমণের বিরুদ্ধে সাহায্যের বিনিময়ে ল্যাজারফ বন্দরটি ইজারা হিসাবে পেয়েছিল। ফলে রুশ আধিপত্যে জাপান স্বাভাবিকভাবে শঙ্কিত হয়ে পড়েছিল।

দ্বিতীয়ত, কোরিয়াতে যে অভ্যন্তরীণ গণ্ডগোল চলছিল তা জাপান পছন্দ করেনি। জাপানি শাসকেরা উপলব্ধি করেছিল যে প্রতিবেশী দেশ কোরিয়াতে অভ্যন্তরীণ গণ্ডগোল চললে তার প্রভাব জাপানে পড়তে পারে। পরিণতিতে জাপানের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা নষ্ট হতে পারে।

তৃতীয়ত, অর্থনৈতিক কারণে জাপান কোরিয়ার ওপর তার নিয়ন্ত্রণ বা প্ৰভুত্ব প্রতিষ্ঠা করতে বদ্ধপরিকর ছিল। ঊনবিংশ শতকের শেষের দিকে জাপানে শিল্প বিপ্লব হয়েছিল। শিল্পবিপ্লবের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালের অভাব জাপানে ছিল। শিল্পবিপ্লবের সময়ে জাপানে জনসংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছিল। জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও কৃষিযোগ্য জমি বাড়েনি। জাপানে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছিল। কোরিয়াতে প্রচুর ধান উৎপন্ন হত। তাই জাপান অনুভব করেছিল কোরিয়া দখল করতে পারলে সে খাদ্য সংকট থেকে রেহাই পাবে। এছাড়াও কোরিয়ার খনিজ ও প্রাকৃতিক সম্পদ জাপানের দ্রুত শিল্প উন্নতির পক্ষে সহায়ক হবে। তাছাড়া জাপান জানত যে, এশিয়ার মূল ভূখণ্ডে সাম্রাজ্য বিস্তার করতে হলে কোরিয়া দখল করা তার পক্ষে আবশ্যক।

চতুর্থত, ওই সময়ে জাপানের প্রধানমন্ত্রী কাউন্ট ইতোর প্রতি জনগণ ঠিক খুশি ছিল না। তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ধূমায়িত হয়েছিল। ইতো মনে করেছিলেন কোরিয়াতে একটি আক্রমণাত্মক সফল পররাষ্ট্র নীতি অনুসরণ করতে পারলে তিনি অভ্যন্তরীণ সংকটের হাত থেকে মুক্তি পাবেন।

                             কোরিয়ার প্রশ্নে চীনের সঙ্গে যুদ্ধ করার ক্ষেত্রে জাপান আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছিল যে, সে সেখানে আত্মরক্ষার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। কিন্তু জাপানের এই বক্তব্যকে গ্রহণ করা যায় না। কারণ প্রকৃতপক্ষে কোরিয়া এতকাল চীনের করদ রাজ্য হিসাবেই স্বীকৃত ছিল। তাই কোরিয়ার ওপর জাপানের তুলনায় চীনের দাবি ছিল অনেক বেশি ন্যায়সংগত। এছাড়াও কোরিয়ার রাজধানী সিওলে যে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছিল এবং যাকে কেন্দ্র করে চীন-জাপান যুদ্ধ শুরু হয়েছিল তা ছিল বহুলাংশে জাপান কর্তৃক সৃষ্ট।

                           চীন মূলত দুটি কারণে এই যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিল। প্রথমত, সে কোরিয়ার ওপর তার দীর্ঘদিনের আধিপত্যকে বজায় রাখতে চেয়েছিল। তাই জাপান যখন কোরিয়াতে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছিল তখন সে স্বভাবতই ক্ষুব্ধ হয়েছিল। দ্বিতীয়ত, জাপানের ন্যায় চীনা রাষ্ট্রনায়করাও অভ্যন্তরীণ সংকটের দ্বারা জর্জরিত ছিল। সে সময়ে পিকিং দরবারে লি-হুং-চ্যাঙের বিরোধী একটি গোষ্ঠী বেশ শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল। তারা লির কোরীয় নীতিকে দুর্বল ভেবে কঠোর সমালোচনা করেছিল। রাজদরবারে নিজ প্রভাব ও প্রতিপত্তি বজায় রাখার জন্য লি-হুং-চ্যাং কোরিয়ার প্রশ্নে ক্রমশই জাপানের বিরুদ্ধে কঠোর মনোভাব গ্রহণ করেন। লি এবং ইতোর এই ধরনের মনোভাব চীন-জাপান যুদ্ধকে নিশ্চিত করে দিয়েছিল

                            কোরিয়ার টংহ্যাক বিদ্রোহকে চীন-জাপান যুদ্ধের প্রত্যক্ষ কারণ বলা চলে। টংহ্যাকরা ছিল এক রক্ষণশীল জঙ্গি গোষ্ঠী। এই আন্দোলন প্রথম দিকে ছিল ধর্মীয় আন্দোলন। কিন্তু সরকারের দমনমূলক নীতির ফলে এই আন্দোলন রাজনৈতিক আন্দোলনে পরিণত হয়েছিল। তারা দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মচারীদের হত্যা করার অভিযান শুরু করেছিল। কোরিয়া সরকার এই বিদ্রোহীদের দমন করতে ব্যর্থ হয়ে চীনের সাহায্য চেয়েছিল। চীন এই বিদ্রোহ দমনের জন্য সৈন্য প্রেরণ করেছিল। জাপানও এক বিশাল সেনাবাহিনী কোরিয়াতে প্রেরণ করেছিল। ফলস্বরূপ সহজেই এই টংহ্যাক বিদ্রোহ দমিত হয়েছিল। কিন্তু চীন ও জাপান কোরিয়া থেকে সৈন্য সরাতে রাজি হয়নি। তারা পরস্পরকে দোষারোপ করেছিল। জাপান কোরিয়াতে আধুনিক সংস্কার ব্যবস্থা প্রচলনের দাবি জানিয়েছিল। সৈন্য অপসারণ ও সংস্কার প্রবর্তনের প্রশ্নে মতভেদ তীব্র আকার ধারণ করলে জাপান ১৮৯৪ সালের পয়লা আগস্ট চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল। এইভাবে চীন-জাপান যুদ্ধ শুরু হয়েছিল।                            

জ্ঞ্যানজ্যোতি কোচিং সেন্টার

তোমাদের উজ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলব আমরা, এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি

অনলাইনে কোচিং নিতে হলে এবং বিভিন্ন নোট নিতে হলে এই নাম্বারে কল করুন।

Tags

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
bookstore