তাইপিং বিদ্রোহের ব্যর্থতার কারণগুলি সম্পর্কে আলোচনা করো।

Nil's Niva
0

 Q. Why the Taiping Rebellion was failed?

§  তাইপিং বিদ্রোহের ব্যর্থতার কারণঃ

                            আদর্শগত ঐক্য, মজবুত সংগঠন, নিয়মানুবর্তিতা, শৃঙ্খলাবোধ, নৈতিক চরিত্রের বলিষ্ঠতা ও রণকৌশল ইত্যাদির জন্য তাইপিং বিদ্রোহ দীর্ঘ ১৪ বছর স্থায়ী হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই বিদ্রোহ সফল হয়নি। এই বিদ্রোহ ব্যর্থ হয়েছিল।

                           প্রথমত, তাইপিং বিদ্রোহীরা চীনের ঐতিহ্যগত সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কী প্রক্রিয়ায় এই পরিবর্তন হবে সে সম্পর্কে তাদের কোনো স্পষ্ট ধারণা বা চিন্তা ছিল না। ফলে তারা কোনো ইতিবাচক ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে পারেনি।

                          দ্বিতীয়ত, বিদ্রোহীদের পরিকল্পনার ত্রুটি তাদের ব্যর্থতার অন্যতম কারণ ছিল। নানকিং দখল করার পর বিদ্রোহীরা উত্তর অভিমুখে অভিযান চালায়নি এবং পিকিং  দখল করার কোনো চেষ্টা করেনি এবং মাঞ্চু রাজদরবারকে আক্রমণ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেনি। এ ধরনের কোনো ইতিবাচক চিন্তা বিদ্রোহীদের ছিল না।তাদের কৌশলগত ও পরিকল্পনাগত ত্রুটি ও অদূরদর্শিতার নীতি তাদের ব্যর্থতাকে নিশ্চিত করেছিল।

                           তৃতীয়ত, বিদ্রোহীদের কোনো গঠনমূলক মানসিকতা ছিল না। তারা যেসব অঞ্চল দখল করত সেখানে অবাধে লুণ্ঠন করত। তাদের অধিকৃত অঞ্চলগুলোতে তারা কোনো প্রশাসনিক ও সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। ফলস্বরূপ দেখা যায় যে মাঞ্চুবাহিনী ঐ সব অঞ্চলগুলোকে সহজে পুনরায় নিজেদের দখলে আনতে পেরেছিল। পরিণামে তাইপিং বিদ্রোহের পতন আসন্ন হয়ে পড়েছিল।

                           চতুর্থত, বিদ্রোহীদের আদর্শ ও চিন্তাধারার দুর্বলতা তাদের পতনকে অবধারিত করেছিল। বিদ্রোহীদের চিন্তাধারায় বা দর্শনে খ্রিস্টান ধর্মের অপ্রত্যক্ষ প্রভাব ছিল। বিদ্রোহীদের ঐতিহ্যগত ধর্মবিশ্বাসকে অস্বীকার করা, মন্দির ধ্বংস করা এবং মূর্তি ভাঙার নীতিকে সাধারণ চীনারা বিশেষত বৌদ্ধরা ভালোভাবে নেয়নি। জনসমর্থন বঞ্চিত হয়ে পড়লে এই বিদ্রোহের ব্যর্থতা চূড়ান্ত হয়ে পড়েছিল।

                         পঞ্চমত, তাইপিং বিদ্রোহের নেতাদের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব ও আদর্শগত বিরোধ এই বিদ্রোহকে দুর্বল করে দিয়েছিল। হুং-এর অধীনে পাঁচজন 'রাজা' উপাধিধারী নেতা ছিলেন। তাঁদের মধ্যে কোনো ঐক্য ছিল না বরং তাদের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব ছিল। এঁদের মধ্যে ইয়াং-শিউ-চিং (Yang-Hsiu-Ching) ছিলেন সবচেয়ে চক্রান্তকারী। তিনি তাইপিং বিদ্রোহের প্রধান নেতা হুং-এর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে পড়েছিলেন। উপযুক্ত নেতৃত্বের অভাব তাইপিং বিদ্রোহকে ক্রমশ দুর্বল করে দিয়েছিল।

                        ষষ্ঠত, তাইপিং বিদ্রোহের ব্যর্থতার পিছনে সবচেয়ে বড়ো কারণ ছিল বিদ্রোহের নেতাদের চরিত্রের নৈতিক অধঃপতন। তাইপিং বিদ্রোহীদের প্রচারিত আদর্শবাদ হাজার হাজার মানুষকে এই বিদ্রোহের প্রতি আস্থাশীল করেছিল। সেই আদর্শ থেকে নেতাদের বিচ্যুতি তাইপিং বিদ্রোহের পতনকে সুনিশ্চিত করেছিল তা বলাই বাহুল্য।

                       সপ্তমত, ১৮৫৬ সালের মধ্যে বিদ্রোহীদের প্রথম সারির অধিকাংশ নেতার মৃত্যু হয়েছিল। তাদের যোগ্য উত্তরাধিকারী তৈরি হয়নি। এর ফলে তাইপিং নেতৃত্ব ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়েছিল।

                      অষ্টমত, বিদেশি পাশ্চাত্য শক্তিবর্গের বিরোধিতা তাইপিং বিদ্রোহের পতনকে নিশ্চিত করেছিল। এইসব বিবিধ কারণে প্রাথমিক সাফল্যের পর তাইপিং বিদ্রোহীরা চূড়ান্তভাবে পরাজিত হয়েছিল।

জ্ঞ্যানজ্যোতি কোচিং সেন্টার

তোমার উজ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলব আমরা, এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি

6295916282; 7076398606

জ্ঞ্যানজ্যোতি কোচিং সেন্টার

তোমাদের উজ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলব আমরা, এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি

অনলাইনে কোচিং নিতে হলে এবং বিভিন্ন নোট নিতে হলে এই নাম্বারে কল করুন।

Tags

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
bookstore