Q: Discuss the significance of rural sociology in
India.
v
গ্রামীণ সমাজতত্ত্বের গুরুত্বঃ
গ্রামীণ সমাজতত্ত্ব (Rural
Sociology) হলো সমাজতত্ত্বের সেই শাখা যা গ্রামীণ জীবন, সমাজ কাঠামো, সামাজিক সম্পর্ক,
প্রতিষ্ঠান, সমস্যা এবং পরিবর্তনসমূহ অধ্যয়ন করে। এটি কেবল গ্রামীণ এলাকার মানুষের
জীবনধারা নিয়ে আলোচনা করে না, বরং গ্রামীণ সমাজকে প্রভাবিত করে এমন কৃষি, পরিবেশ,
প্রযুক্তি এবং নীতিগত বিষয়গুলিও পর্যালোচনা করে। আধুনিক রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনে গ্রামীণ
সমাজতত্ত্বের গুরুত্ব অপরিসীম। গ্রামীণ সমাজতত্ত্বের গুরুত্বগুলো নিচে আলোচনা করা হলো:
১. গ্রামীণ সমাজ কাঠামো বোঝাঃ গ্রামীণ সমাজতত্ত্ব গ্রামীণ এলাকার জটিল সামাজিক বিন্যাস,
স্তরবিন্যাস, গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের সম্পর্ক বিশ্লেষণ করে। এটি গ্রামীণ সমাজে বিদ্যমান
ক্ষমতা কাঠামো, জাতি, ধর্ম এবং শ্রেণিগত বিভাজনগুলি বুঝতে সাহায্য করে। এই জ্ঞান সঠিক
সামাজিক নীতি প্রণয়নের জন্য অপরিহার্য।
২. কৃষি ও অর্থনীতির সমস্যা সমাধানঃ গ্রামীণ অর্থনীতির মূল ভিত্তি হলো কৃষি। এই সমাজতত্ত্ব
কৃষিজমির মালিকানা, ভূমি সংস্কার, কৃষি প্রযুক্তি গ্রহণ, গ্রামীণ দারিদ্র্য এবং অ-কৃষি
অর্থনীতির বিকাশ নিয়ে অধ্যয়ন করে। এই অধ্যয়ন কৃষি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং গ্রামীণ
মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে।
৩. গ্রামীণ উন্নয়ন পরিকল্পনায় সহায়তাঃ যে কোনো জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনায় গ্রামীণ সমাজতত্ত্ব
একটি ভিত্তিপ্রস্তর হিসেবে কাজ করে। গ্রামীণ মানুষের চাহিদা, স্থানীয় সম্পদ, সামাজিক
রীতিনীতি এবং উন্নয়নের পথে বিদ্যমান বাধাগুলো সম্পর্কে সমাজতাত্ত্বিক জ্ঞান উন্নয়নমূলক
প্রকল্পগুলোর (যেমন: রাস্তা নির্মাণ, স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন, শিক্ষা প্রসার) কার্যকারিতা
ও স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।
৪. সামাজিক পরিবর্তন বিশ্লেষণঃ গ্রামীণ সমাজ গতিশীল। শিল্পায়ন, নগরায়ন, প্রযুক্তির
প্রবেশ এবং বিশ্বায়নের প্রভাবে গ্রামীণ সমাজ দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। গ্রামীণ সমাজতত্ত্ব
এই পরিবর্তনগুলোর গতি, প্রকৃতি, কারণ এবং এর ফলস্বরূপ উদ্ভূত নতুন সামাজিক সমস্যাগুলো
(যেমন: গ্রামীণ কর্মসংস্থান সংকট, গ্রাম থেকে শহরে পরিযান বা Migration বিশ্লেষণ করে।
৫. সামাজিক প্রতিষ্ঠান এবং সম্পর্কের মূল্যায়নঃ এই সমাজতত্ত্ব গ্রামীণ জীবনের মূল
প্রতিষ্ঠান যেমন পরিবার, বিবাহ, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, পঞ্চায়েত বা স্থানীয় সরকার এবং
শিক্ষাব্যবস্থাগুলোর ভূমিকা ও কার্যকারিতা মূল্যায়ন করে। ঐতিহ্যবাহী সম্পর্কগুলো কিভাবে
পরিবর্তিত হচ্ছে, যৌথ পরিবার ভেঙ্গে একক পরিবার গঠনের প্রবণতা, অথবা নারীদের ক্ষমতায়ন—এসব
বিষয় নিয়ে গবেষণা করে।
৬. গ্রামীণ-নাগরিক সম্পর্ক বিশ্লেষণঃ গ্রামীণ সমাজতত্ত্ব গ্রাম ও শহরের মধ্যেকার পারস্পরিক
সম্পর্ক এবং নির্ভরশীলতা নিয়ে আলোচনা করে। শহরগুলি গ্রামীণ এলাকা থেকে যে খাদ্য ও
শ্রম শক্তি লাভ করে, এবং গ্রামীণ এলাকা কিভাবে শহরের বাজারের ওপর নির্ভরশীল—এই জটিল
অর্থনৈতিক ও সামাজিক সম্পর্কগুলো বোঝা যায়। এটি ভারসাম্যপূর্ণ আঞ্চলিক উন্নয়ন নিশ্চিত
করতে গুরুত্বপূর্ণ।
৭. নীতি প্রণয়ন ও প্রশাসনিক কার্যকারিতাঃ সরকার এবং অ-সরকারি সংস্থাগুলোর (NGOs) জন্য গ্রামীণ
সমাজতত্ত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের স্থানীয় সংস্কৃতি ও
মানুষের মনোভাব বুঝতে সাহায্য করে, যার ফলে সরকারি কর্মসূচিগুলো জনগণের দ্বারা আরও
সহজে গৃহীত হয় এবং তাদের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়।
মোটকথা, গ্রামীণ সমাজতত্ত্ব কেবল একাডেমিক
অধ্যয়ন নয়; এটি জাতি গঠনের, দারিদ্র্য দূর করার এবং সমাজের সবচেয়ে দুর্বল অংশটির
উন্নয়ন নিশ্চিত করার একটি অপরিহার্য হাতিয়ার। গ্রামীণ ভারতের মতো দেশে, যেখানে জনসংখ্যার
একটি বিশাল অংশ গ্রামে বসবাস করে, সেখানে গ্রামীণ সমাজতত্ত্বের গুরুত্ব কোনোভাবেই অস্বীকার
করা যায় না।
জ্ঞ্যানজ্যোতি কোচিং সেন্টার
তোমাদের উজ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলব আমরা, এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি
অনলাইনে কোচিং নিতে হলে এবং বিভিন্ন নোট নিতে হলে এই নাম্বারে কল করুন।

