প্রশ্ন- মেগাস্থিনিস সম্পর্কে একটি টীকা লেখো।
অথবা, টীকা লেখো: ইন্ডিকা।
গ্রিক রাজা সেলুকাস মৌর্য সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত
মৌর্যের রাজসভায় মেগাস্থিনিস নামে এক দূতকে পাঠান। রাজদূত মেগাস্থিনিস তাঁর প্রত্যক্ষ
অভিজ্ঞতা থেকে ভারতবর্ষ সম্পর্কে এক বিস্তৃত বিবরণ গ্রিক ভাষায় লিপিবদ্ধ করেন। তাঁর
এই ভারত বিবরণের নাম 'ইন্ডিকা'। এই বিবরণ পরবর্তী গ্রিক-লাতিন লেখকদের কাছে ছিল একখানা
প্রামাণ্য গ্রন্থ। আমাদের দুর্ভাগ্য মেগাস্থিনিসের বর্ণনার পান্ডুলিপি কালস্রোতে হারিয়ে
গেছে। তবে পান্ডুলিপিটির যেটুকু অস্তিত্ব ছিল বহু গ্রিক ও লাতিন লেখক তাঁর অনেক অংশ
নিজেদের রচনায় উদ্ধৃতিরূপে ব্যবহার করেছিলেন। এই উদ্ধৃত অংশগুলিকে এক করে যা দাঁড়িয়েছে
তাই হল এখনকার 'ইন্ডিকা'। এ হল এক ধরনের পুনর্নির্মাণ। ব্যাসাম লিখেছেন, মেগাস্থিনিসের
বিবরণ কোনো একজন বিদেশির ভারত সম্পর্কে প্রামাণিক প্রথম প্রতিবেদন। ইন্ডিকার বিবরণের
মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ভারত ও তাম্রপণীর ভৌগোলিক বিবরণ, ভারতের উর্বরতা, পাটলিপুত্র
নগরের বিবরণ, ভারতে দাসপ্রথার অভাব, সাতটি জাতি, দার্শনিকের অভাব ইত্যাদি।
আরিয়ান, স্ট্রাবো এবং প্লিনির বিবরণ থেকে
জানা যায়, মেগাস্থিনিস কান্দাহার হয়ে পাটলিপুত্রে 302 খ্রিস্টপূর্বাব্দে এসে পৌঁছান
এবং দীর্ঘকাল ভারতে বসবাস করেন। কিন্তু ভারতীয় ভাষা না জানার জন্য ও সমগ্র ভারত পরিদর্শন
না করার জন্য তাঁকে অন্যের প্রতিবেদনের ওপর ভরসা করতে হয়েছে। এতে তাঁর বর্ণনার ভুলভ্রান্তি
পাওয়া যায়। তাই ভারতীয়দের জাতিভেদ, ধর্ম, দেবদেবীর যথার্থ বিবরণ 'ইন্ডিকা'য় পাওয়া যায়।
তবে মৌর্য রাজধানী পাটলিপুত্র নগরী, সম্রাট চন্দ্রগুপ্তের রাজপ্রাসাদ, রাজসভা ও সেনা
শিবিরের যে বিস্তৃত বিবরণ তিনি দিয়েছেন তা ছিল তাঁর প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতালব্ধ।
জ্ঞ্যানজ্যোতি কোচিং সেন্টার
তোমাদের উজ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলব আমরা, এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি
অনলাইনে কোচিং নিতে হলে এবং বিভিন্ন নোট নিতে হলে এই নাম্বারে কল করুন।