শান্তি শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য আলোচনা করো।

Nil's Niva
0

প্রশ্ন- শান্তি শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য আলোচনা করো। 

[Discuss The Aims and Objectives of Peace Education.]      

উত্তরঃ   আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগেও যেখানে সর্বদা হিংসা, অপরাধ, বিদ্বেষ, সংকীর্ণ রাজনীতি, ধর্মীয় উগ্রতা, সন্ত্রাসবাদ, অহংকার, আগ্রাসন, বেকারত্ব, সামাজিক সম্পর্কের অবনতি প্রভৃতির উসকানি ব্যক্তি এবং সমাজকে ধ্বংসের মুখে এগিয়ে নিয়ে চলছে, সেখানে শান্তি শিক্ষার তাৎপর্য বা প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করা যায় না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সারা বিশ্বে শাস্তির বাতাবরণ তৈরির জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ। জাতিসংঘের বিভিন্ন উপ-সংস্থা, যেমন-UNICEF, UNESCO, WHO প্রভৃতি সংস্থাগুলি শান্তির বাতাবরণ তৈরিতে সারাবছর কাজ করে চলেছে। বর্তমানে আদর্শহীনতা, দুর্নীতি, সন্ত্রাসবাদ, ক্রমবর্ধমান অপরাধপ্রবণতা ও নৈতিক অবমূল্যায়েনর জন্য শাস্তি শিক্ষার সূত্রপাত ঘটেছে। সামাজিক দায়দায়িত্ব, কর্তব্যবোধ, সততা, নির্লোভ স্বভাব, পারস্পরিক ভালোবাসা, মূল্যবোধ, সৌভ্রাতৃত্ববোধ, নিয়মনিষ্ঠা ইত্যাদির বর্তমানে অভাব দেখা দিয়েছে। উক্ত বিভিন্ন নৈতিক দায়িত্ব ও বোধ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে শাস্তি শিক্ষা বর্তমানে অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। চরিত্রবান মানুষ, সুগঠিত শান্তিপূর্ণ সমাজ, বিশ্বে শান্তির বাতাবরণের জন্য বর্তমানে শাস্তি শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য।

        শাস্তির শিক্ষার সামগ্রিক লক্ষ্য হল একটি শান্তিপূর্ণ নির্মাণ। শাস্তি শিক্ষার মূল লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য হল একটি নিরাপদ ভবিষ্যৎ ও একটি ঐক্যবদ্ধ পৃথিবী নির্মাণে সহায়তা করা। অন্যান্য লক্ষ্য হল- 

(i) পাঠক্রম জুড়ে শাস্তি শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে শাস্তি জাগ্রত করার জন্য-সহনশীলতা, ন্যায়বিচার, আন্তঃসাংস্কৃতিক বোঝাপড়া এবং নাগরিক দায়িত্ববোধ ইত্যাদি গড়ে তোলা।

(ii) অন্যদের প্রয়োজনের প্রতি পরস্পর নির্ভরতা, সহানুভূতি এবং সংবেদনশীলতা সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সচেতন হতে উৎসাহিত করা।

(iii) আমাদের তরুণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি সুস্থ ও শান্তিপূর্ণ মন এবং শান্তির প্রতি ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করতে সহায়তা করা। নতুন প্রজন্ম ও শিক্ষার্থীদের শান্তির বাতাবরণ প্রস্তুত করতে শেখানো এবং শান্তির সভ্যতা নির্মাণের উপযোগী দক্ষতা ও সক্ষমতার বিকাশ ঘটানো।

(iv) এই শিক্ষার অন্যতম লক্ষ্য শিক্ষার্থীর মধ্যে আত্মনিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। এর পাশাপাশি ব্যক্তিকে চরিত্রবান ও হৃদয়বান করে গড়ে তোলাও এই শিক্ষার উদ্দেশ্য।

(v) ধর্মীয়, ভাষাগত, সাংস্কৃতিক এবং আঞ্চলিক বৈচিত্র্যকে অতিক্রম করে ভারতের সমস্ত মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি এবং অভিন্ন ভ্রাতৃত্বের চেতনা প্রচার করা।

(vi) ব্যক্তিকে জগৎ ও জীবন সম্পর্কে বাস্তবধর্মী জ্ঞান দান করে সমাজের উপযোগী করে তোলা। ব্যক্তিকে পরিবর্তনশীল পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে অভিযোজন করতে সাহায্য করা।

  •  শান্তি শিক্ষার উদ্দেশ্য সম্পর্কে অধ্যাপক Betty A. Reardon বলেছেন, জ্ঞান ও দক্ষতার পাশাপাশি সামর্থ্য এবং শান্তির পথে প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে ওঠার এবং একটি বিশ্বব্যাপী সম্প্রদায় গড়ে তোলার জন্য যা সমগ্র মানব পরিবারকে অন্তর্ভুক্ত করে এবং সকল মানুষের সমান মূল্য এবং পূর্ণ মর্যাদা প্রদান করে। 

    সমগ্র বিশ্বে শান্তির বাতাবরণ তৈরির উদ্দেশ্যই এই শিক্ষার মূল লক্ষ্য। শাস্তি যেমন শিক্ষার্থীদের চরিত্র গঠনে গুরুত্ব দেয় তেমনি শিক্ষার্থীর মধ্যে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মূল্যবোধ গড়ে তুলতেও সাহায্য করে।



জ্ঞ্যানজ্যোতি কোচিং সেন্টার

তোমাদের উজ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলব আমরা, এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি

অনলাইনে কোচিং নিতে হলে এবং বিভিন্ন নোট নিতে হলে এই নাম্বারে কল করুন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
bookstore