Q. The treaty of nanking marked the beginning of the opening of China but the actual beginning was affected by the treaties of Tiensin - explain?
ঊনবিংশ ও বিংশ শতকে ব্রিটেন,
ফ্রান্স, জার্মানি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, জাপান প্রভৃতি ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদী
শক্তিগুলি চিনকে বিভিন্ন যুদ্ধে পরাজিত করে এবং নিজেদের অর্থনৈতিক ও সামরিক আধিপত্যের
প্রসার ঘটিয়ে তার ওপর বেশ কয়েকটি একতরফা শোষণমূলক চুক্তি চাপিয়ে দেয়। এই চুক্তিগুলি
সাধারণভাবে 'অসম চুক্তি' বা 'বৈষম্যমূলক চুক্তি' নামে পরিচিত। এসব ‘অসম’
চুক্তি সম্পর্কে নীচে আলোচনা করা হল—
§ নানকিং-এর চুক্তি:
অষ্টাদশ
শতকে চিনে আফিমের আমদানি ও ব্যবহার বন্ধ করার উদ্দেশ্যে চিন সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়
। লিন্-জে-সু নামে জনৈক চিনা কর্মচারী ক্যান্টন বন্দরে ব্রিটিশ বণিকদের ২০ হাজার পেটি
আফিম বাজেয়াপ্ত করে তা সর্বসমক্ষে ধ্বংস করেন (১৮৩৯ খ্রি.)। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে
প্রথম ইঙ্গ-চিন যুদ্ধ বা প্রথম অহিফেন যুদ্ধ (১৮৩৯-৪২ খ্রি.) হয়। যুদ্ধে পরাজিত হয়ে
চিন ব্রিটিশদের সঙ্গে নানকিং-এর সন্ধি (১৮৪২ খ্রি.) স্বাক্ষরে বাধ্য হয়।
নানকিং-এর
সন্ধির দ্বারা—
(1) ক্যান্টন, সাংহাই, অ্যাময়, ফুচাও, নিংপো — চিনের এই পাঁচটি বন্দর - ইউরোপীয় বণিকদের
বাণিজ্য ও বসবাসের জন্য খুলে দেওয়া হয়। এগুলি 'চুক্তি বন্দর' নামে পরিচিত। (2) হংকং
বন্দর চিরকালের জন্য ইংরেজদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়। (3) ক্যান্টন বন্দরের বাইরে অবস্থান
করে ‘কো-হং' নামে বণিকদের মাধ্যমে চিনের সঙ্গে ব্রিটিশদের বাণিজ্য করার প্রথা বাতিল
হয়। (4) ক্যান্টন বন্দরে ইংরেজদের আফিম ধ্বংস করার জন্য চিনের সরকার ইংরেজদের ৬ মিলিয়ন,
যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ বাবদ ১২ মিলিয়ন এবং 'কো-হং’
বণিকদের ঋণ পরিশোধের জন্য ৩ মিলিয়ন রৌপ্য ডলার দিতে বাধ্য হয়।
§ বগ-এর চুক্তি:
নানকিং-এর
সন্ধির কিছুকাল পর ব্রিটিশ সরকার চিনের ওপর বগ-এর সন্ধি (১৮৪৩ খ্রি.) চাপিয়ে দেয়।
এই সন্ধির দ্বারা ব্রিটেন চিনে কিছু 'অতি-রাষ্ট্রিক অধিকার' লাভ করে। এই চুক্তির দ্বারা
'চুক্তি বন্দর'গুলিতে বসবাসকারী চিনা ও ব্রিটিশ অধিবাসীদের ওপর চিনের আইন ও প্রশাসনের
নিয়ন্ত্রণ লুপ্ত হয়। তারা ব্রিটিশ আইন ও বিচারব্যবস্থার অধীনে আসে। ও চিন অন্য কোনো
বিদেশি রাষ্ট্রকে ভবিষ্যতে যেসব সুযোগ সুবিধা দেবে সেগুলি ব্রিটেনকেও দিতে প্রতিশ্রুতি
দেয়। ওয়াঘিয়ার চুক্তি: অন্যান্য ইউরোপীয় শক্তিগুলি চিনের কাছ থেকে বেশ কিছু বাণিজ্যিক
সুবিধা আদায় করলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও এসব সুবিধা পেতে তৎপর হয় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
এবিষয়ে চাপ দিতে থাকলে দুর্বল চিন আমেরিকার সঙ্গে ওয়াংঘিয়ার চুক্তি (১৮৪৪ খ্রি.,
৩ জুলাই) সাক্ষর করে। এই চুক্তির দ্বারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চিনে বিভিন্ন অতি-রাষ্ট্রিক
সুবিধা লাভ করে। চিনের 'চুক্তি বন্দর'গুলিতে বসবাসকারী বিদেশিরা আইনগত, বিচারবিভাগীয়,
পুলিশ-সংক্রান্ত এবং কর-সংক্রান্ত বিষয়ে স্বাধীনতা লাভ করে।
§ হোয়ামপোয়ার চুক্তি :
ফ্রান্স
চিনের ওপর হোয়ামপোয়া-র চুক্তি (১৮৪৪ খ্রি. ২৪ অক্টোবর) চাপিয়ে দেয়। চিনের কাছ থেকে
ব্রিটেন ইতিমধ্যে যেসব সুযোগসুবিধা আদায় করেছিল ফ্রান্সও হোয়ামপোয়া চুক্তির দ্বারা
সেসব সুযোগসুবিধা আদায় করে। এই সন্ধির দ্বারা—
1.চিনের
নতুন পাঁচটি বন্দর ফরাসি বণিকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
2.ফরাসি
নাগরিকরা চিনে অতি-রাষ্ট্রিক সুবিধা লাভ করে।
3.চিন
ও ফরাসি বণিকদের মধ্যে বণিক শুল্ক নির্দিষ্ট হয় ।
§ আইগুন-এর সন্ধি:
ইংল্যান্ড
ও ফ্রান্সের কাছে দ্বিতীয় অহিফেন যুদ্ধে চিন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। সেই সুযোগে চিনের
ওপর রাশিয়া আইগুন-এর সন্ধি (১৮৫৮ খ্রি. ২৮ মে) চাপিয়ে দেয়। এই সন্ধির দ্বারা—
1.চিনের
উত্তরাংশের বেশ কিছু এলাকায় রাশিয়ার আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয় ৷
2.চিনের
আমুর, উসুরি ও সংঘুয়াজিয়াং নদীতে একমাত্র রাশিয়া ও চিনের নৌ-চলাচল স্বীকৃত হয় ।
§ টিয়েনসিনের চুক্তি:
ইউরোপীয়
শক্তিগুলি চিনে আরও সুবিধা পাওয়ার জন্য উদ্গ্রীব হয়ে ওঠে। এই সময় চিন সরকারের বিরুদ্ধে
বিদ্রোহ ছড়ানোর অভিযোগে চিনের বিচারকরা চ্যাপডেলেন নামে জনৈক ফরাসি ধর্মযাজকের প্রাণদণ্ড
(১৮৫৬ খ্রি.) দেয়। তা ছাড়া আফিমের চোরাচালানের কাজে লিপ্ত একটি ব্রিটিশ জাহাজ চিন
সরকার বাজেয়াপ্ত করে নাবিকদের উপযুক্ত শাস্তি দেয়। এর ফলে ক্ষুব্ধ ব্রিটেন ও ফ্রান্স
চিনকে দ্বিতীয় অহিফেন যুদ্ধে (১৮৫৬-৫৮ খ্রি.) পরাজিত করে টিয়েনসিনের সন্ধি (১৮৫৮
খ্রি. জুন) স্বাক্ষরে বাধ্য করে ।
টিয়েনসিনের
সন্ধির শর্তানুসারে, (1) চিন সরকার ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সকে প্রচুর ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি
হয়। (2) বিদেশি বণিকদের জন্য চিনের আরও ১১টি বন্দর খুলে দেওয়া হয়। (3) রাজধানী পিকিং-এ
বিদেশি দূতাবাস স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় ৷
জ্ঞ্যানজ্যোতি কোচিং সেন্টার
তোমাদের উজ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলব আমরা, এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি
অনলাইনে কোচিং নিতে হলে এবং বিভিন্ন নোট নিতে হলে এই নাম্বারে কল করুন।