Q. Discuss the role of Sun Yat Sen in the Chinese revolution of 1911?
১৯১১ সালের সফল চৈনিক
বিপ্লবের মহানায়ক ছিলেন সান-ইয়াৎ-সেন। চীনের গণপ্রজাতান্ত্রিক বিপ্লবের নেতা মাও-সে-তুং
থেকে শুরু করে সকলেই এক বাক্যে স্বীকার করেছেন চীনের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে সানের গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকাকে।তিনি চীনের ইতিহাসে এক স্মরণীয় বরণীয় ব্যক্তিত্ব। আধুনিক চীনের রূপকার ও
জনক হলেন ডাঃ সান-ইয়াৎ-সেন।
ব্যক্তিজীবনে ডাক্তার হিসাবে সাফল্য লাভের চেয়ে
তিনি চীনের উদ্ধারকর্তা হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। তখনকার চীনের রাজনৈতিক
অবস্থা তাঁকে বিচলিত করেছিল। চীনের দুরবস্থা তাঁর হৃদয়কে কাঁদিয়েছিল। তাঁর এই উপলব্ধি
হয়েছিল যে মাঞ্চুদের বিতাড়ন ও পাশ্চাত্য গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করতে
না পারলে চীনের এই দুর্দশা দূর করা যাবে না। এই উদ্দেশ্যে তিনি বিদেশে অবস্থিত প্রগতিশীল
চীনাদের সংগঠিত করার জন্য Hsing Chung Hui বা Revive China Society নামে একটি রাজনৈতিক
সংস্থা গঠন করেছিলেন।
১৮৯৪-৯৫ সালে চীন তার
প্রতিবেশী ছোটো দেশ জাপানের কাছে লজ্জাজনকভাবে পরাজিত হয়েছিল। সানের তখন মনে হয়েছিল
এই সুযোগে বিপ্লবের মাধ্যমে মাঞ্চু শাসনের অবসান ঘটানো দরকার। তাই তাঁর নেতৃত্বে ১৮৯৫
সালে মাঞ্চু-বিরোধী এক অভ্যুত্থান হয়েছিল। কিন্তু তা সফল হয়নি। তিনি দেশ ত্যাগ করতে
বাধ্য হয়েছিলেন। তিনি প্রথমে ইংল্যান্ড এবং পরে জাপানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সে সময়
প্রবাসী বিপ্লবীদের আশ্রয়স্থল ছিল জাপান। তিনি জাপান থেকে বিপ্লবী আন্দোলনকে পরিচালনা
করতে চেয়েছিলেন।
বক্সার আন্দোলন মাঞ্চু
সরকারের দুর্বলতা ও অযোগ্যতাকে প্রকটিত করেছিল। এই সুযোগকে কাজে লাগাবার চেষ্টা করেন
সান। তিনি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মাঞ্চ শাসন উচ্ছেদ করতে প্রয়াসী হয়েছিলেন। কিন্তু
তাঁর এই প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছিল। কিন্তু ব্যর্থতায় তিনি বিচলিত হননি। বিদেশে অবস্থিত
চীনাদের মধ্যে বৈপ্লবিক মতবাদ প্রচার করার জন্য তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করেছিলেন। বিভিন্ন
বৈপ্লবিক সংস্থাগুলোকে একসূত্রে গ্রথিত করা তিনি চেষ্টা করেছিলেন। এই প্রচেষ্টার পরিণতি
হল তুং-মেং-হুই (Tung-meng-Hui)।
তুং-মেং-হুই প্রতিষ্ঠার
পর সানের মধ্যে বৈপ্লবিক চিন্তাধারার দ্রুত বিকাশ ঘটেছিল । এই দল প্রতিষ্ঠার পর চীনের
ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সৃষ্টি হয়েছিল। এই দল একটি ঐক্যবদ্ধ বৈপ্লবিক সংগ্রাম ও
একটি মতাদর্শ গড়ে তোলার কাজ নিশ্চিতভাবে করেছিল। সানও ব্যক্তিগতভাবে বিপ্লবকে সাফল্যমণ্ডিত
করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছিলেন।
১৯১১ সালে চৈনিক বিপ্লব
শুরু হয়েছিল। এই বিপ্লবের পরিণতিতে মাঞ্চু শাসনের পতন এবং চীন থেকে দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যগত
রাজতন্ত্রের অবসান হয়েছিল। চীনে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই প্রজাতন্ত্রের
প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন ডাঃ সান-ইয়াৎ-সেন।
তাঁর আজীবন লালিত স্বপ্ন ছিল সমগ্র চীন দেশকে
ঐক্যবদ্ধ করা। তিনি সেই চেষ্টা করেছিলেন। ১৯২৪ সালে তাঁর সামনে সারা দেশেকে ঐক্যবদ্ধ
করার এক সুবর্ণ সুযোগ এসেছিল। এই সময়ে উত্তর চীনের যুদ্ধবাজ সামরিক নেতারা পরস্পরের
সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত থেকে শক্তিক্ষয় করেছিল। গৃহযুদ্ধে ক্লান্ত উত্তর চীনের নেতারা
দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনা ও দেশকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য সানের সহযোগিতা চেয়েছিলেন। তাঁরা
এই উদ্দেশ্যে আলোচনার জন্য ডাঃ সানকে পিকিং-এ ডাকেন। এই সময়ে ডাঃ সান অত্যন্ত অসুস্থ
ছিলেন। কিন্তু এই অসুস্থতাকে অগ্রাহ্য করে ১৯২৫ সালে জানুয়ারি মাসে তিনি পিকিং-এ এসেছিলেন।
কিন্তু আলোচনা সফল হয়নি। অসুস্থ ডাঃ সান ১২ মার্চ ভগ্ন হৃদয়ে পিকিং-এর এক হাসপাতালে
মৃত্যুবরণ করেছিলেন। তাঁর মৃত্যুর সাথে সাথে চীনের ইতিহাসে এক অধ্যায়ের সমাপ্তি হয়েছিল
এবং নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছিল।
জ্ঞ্যানজ্যোতি কোচিং সেন্টার
তোমাদের উজ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলব আমরা, এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি
অনলাইনে কোচিং নিতে হলে এবং বিভিন্ন নোট নিতে হলে এই নাম্বারে কল করুন।