Q. Critically examine provision of the Treaty of Versailles (1919).
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষে আহূত প্যারিস-শান্তি
সম্মেলনে সিদ্ধান্ত হয় যে, জার্মানীসহ পাঁচটি প্রধান বিরোধী দেশের সাথে মিত্রপক্ষ
পৃথক পৃথক চুক্তি স্বাক্ষর করবে। তদনুসারে জার্মানীর সাথে মিত্রশক্তিবর্গের ভার্সাই-চুক্তি
স্বাক্ষরিত হয় (২৮শে জুন, ১৯১৯ খ্রীঃ)। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য যে, মিত্রশক্তির বিচারে
জার্মানী ছিল যুদ্ধ-অপরাধী। তাই শান্তি সম্মেলনে জার্মান প্রতিনিধিদলকে প্রতীক যুদ্ধবন্দী
হিসেবে গণ্য করা হয়। স্বভাবতই এই আলোচনার শর্তে তাদের কোন মর্যাদা ছিল না। প্রহরী-বেষ্টনীর
মধ্যে জার্মান প্রতিনিধিদের সভাকক্ষে আনা হয় এবং উদ্যত বেয়নেটের সামনে তাদের চুক্তিপত্রে
স্বাক্ষর করতে বলা হয়।
এই অবস্থায় জার্মান
প্রতিনিধিরা ২৩০ পৃষ্ঠায় লিখিত সুবিশাল সন্ধিপত্রের ওপর ৪৪৩ পৃষ্ঠার মন্তব্য পেশ করেন।
লয়েড জর্জের বিশেষ অনুরোধে জার্মানীর অনুকূলে সামান্য সংশোধনের পর ভার্সাই-চুক্তি'
গৃহীত হয়। ৪৪০টি ধারা সম্বলিত ভার্সাই-চুক্তির শর্তগুলিকে চরিত্রানুযায়ী কয়েকটি
ভাগে বিভক্ত করে নেওয়া যেতে পারে, যেমন—ভূখণ্ড
সম্পর্কিত শর্ত, সামরিক শর্ত, অর্থনৈতিক শর্ত ইত্যাদি।
·
ভূখণ্ড-সম্পর্কিত শর্ত:
ভার্সাই-সন্ধির ভূখণ্ড-সম্পর্কিত
শর্ত অনুযায়ী—(১) জার্মানী ফ্রান্সকে
আলসাস-লোরেন ফিরিয়ে দেয়। (২) বেলজিয়ামকে প্রদান করে ইউপেন, মামেডি, মরেসনেট। (৩)
জার্মানী পূর্ব সীমান্তে পোজেন ও পশ্চিম প্রাশিয়া পোল্যাণ্ডকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।
পোল্যাণ্ড যাতে সমুদ্রে যেতে পারে—এজন্য
জার্মানীর ভিতর দিয়ে একটি যোগাযোগকারী রাস্তা পোল্যাণ্ড লাভ ভূখণ্ড সম্পর্কিত শর্ত
করে। পোলিশ করিডোর' নামে অভিহিত এই রাস্তাটি পূর্ব প্রাশিয়া থেকে জার্মানীকে বিচ্ছিন্ন
করে দেয়। (৪) ডেনমার্ক ও লিথুয়ানিয়া লাভ করে যথাক্রমে শুভিগ ও মেমেল বন্দর। (৫)
জার্মানী তার সমস্ত উপনিবেশ মিত্রশক্তিকে অর্পণ করতে বাধ্য হয়। দক্ষিণ-পশ্চিম আফ্রিকাস্থ
উপনিবেশ পায় ইংল্যাণ্ড, পশ্চিম আফ্রিকাস্থ উপনিবেশ পায় ইংল্যাণ্ড ও ফ্রান্স এবং পূর্ব-আফ্রিকাস্থ
উপনিবেশ পায় ইংল্যাণ্ড ও বেলজিয়াম। জার্মানীর অন্যান্য উপনিবেশগুলি জাতিসংঘ দখল করে
ইংল্যাণ্ড ও ফ্রান্সকে অছি (ম্যান্ডেট) হিসেবে শাসনাধিকার দান করে।
·
সামরিক শর্ত:
ভার্সাই-সন্ধির সামরিক শর্তগুলি
ছিল বেশ কঠোর। জার্মানীর সামরিক শক্তিকে নিয়ন্ত্রণে রাখার উদ্দেশ্যে এবং জার্মানীর
ভবিষ্যৎ উত্থানের সম্ভাবনা নির্মূল করার উদ্দেশ্যে জার্মানীর ওপর একাধিক কঠোর সামরিক
নিয়ন্ত্রণ চাপিয়ে দেওয়া হয়। যেমন—(১)
জার্মানীর সৈন্যসংখ্যাকে ১ লক্ষে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। বলে দেওয়া হয়, এই বাহিনী
কেবল অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষার কাজে ব্যবহার করা হবে। (২) জার্মানীতে বাধ্যতামূলক
সামরিক শিক্ষা প্রদান নিষিদ্ধ করা হয়। (৩) হেলিগোল্যাণ্ডের ‘নৌ-ঘাঁটি' বিলুপ্ত করা
হয়। (৪) রাইন নদীর পশ্চিম তীরে ত্রিশ মাইলের মধ্যে স্থাপিত সমস্ত জার্মান দুর্গ ও
সামরিক ঘাঁটি ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়। (৫) জার্মানীর যুদ্ধ জাহাজগুলি ইংল্যাণ্ডকে
প্রদান করা হয়। (৬) জার্মানীর সেনাপতিমণ্ডলকে বরখাস্ত করা হয়। (৭) এই শর্তগুলি যথাযথ
পালিত হচ্ছে কিনা তা তত্ত্বাবধান করার জন্য জার্মানীর খরচে জার্মানীর মধ্যে একটি মিত্রবাহিনী
মোতায়েন করা হয় ইত্যাদি।
·
অর্থনৈতিক শর্ত:
ভার্সাই-সন্ধিতে জার্মানীর
ওপর বেশ কিছু অর্থনৈতিক শর্ত আরোপিত হয়। যেমন—
(১) যুদ্ধে মিত্রশক্তির ক্ষতিপূরণের জন্য জার্মানীর ওপর বিরাট অঙ্কের ক্ষতিপূরণের বোঝা
চাপিয়ে দেওয়া হয়। (২) ফ্রান্সের কয়লাখনিগুলির ক্ষতি করার অপরাধে জার্মানীর কয়লাসমৃদ্ধ
সার-উপত্যকা অঞ্চল ১৫ বছরের জন্য ফ্রান্সের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়। স্থির হয়, ১৫ বছর
পর সার-অঞ্চল গণভোটের মাধ্যমে ঠিক হবে ঐ অঞ্চল পুনরায় জার্মানীর অধীনে ফিরে যাবে কিনা?
(৩) জার্মানী ইতালী ও ফ্রান্সকে স্বল্পমূল্যে লোহা, কয়লা, কাঠ প্রভৃতি খনিজ ও বনজ
পদার্থ সরবরাহ করতে বাধ্য হয়। (৪) রাইন নদীর ওপর আন্তর্জাতিক অধিকার স্থাপন করা হয়।
(৫) জার্মানীর বাজারে মিত্রশক্তির অন্তর্ভুক্ত দেশগুলির দ্রব্যাদি বিক্রয়ের অগ্রাধিকার
পায়।
জ্ঞ্যানজ্যোতি কোচিং সেন্টার
তোমাদের সাফল্য, আমাদের লক্ষ্য
6295916282;
7076398606
জ্ঞ্যানজ্যোতি কোচিং সেন্টার
তোমাদের উজ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলব আমরা, এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি
অনলাইনে কোচিং নিতে হলে এবং বিভিন্ন নোট নিতে হলে এই নাম্বারে কল করুন।