কারক ও অ-কারক
১. সমধাতুজ কর্তা কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ ক্রিয়াটি যে ধাতুনিষ্পন্ন, কর্তাও যদি সেই একই ধাতু
থেকে উৎপন্ন হয়, তখন তাকে সমধাতুজ কর্তা বলে। যেমন—কুকাজের
ফল ফলেছে। গায়ক গায়, বাদক বাজায়।
২. ধাতু বিভক্তি কাকে বলে?উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ ধাতুর সঙ্গে যুক্ত হয়ে যে সব বিভক্তি ক্রিয়াপদ গঠন
করে তাদের ধাতু বিভক্তি বলে। যেমন—বল্ + ই = বলি, ক + ত = করত।
৩. তির্যক বিভক্তি কাকে বলে?
উত্তরঃ যে বিভক্তি চিহ্ন একাধিক কারকে ব্যবহৃত হয়, তাকে
তির্যক বিভক্তি বলে। এ, তে, এতে, এগুলি হল তির্যক বিভক্তির উদাহরণ।
৪. অ-কারক সম্পর্ক বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ ক্রিয়াপদের সঙ্গে বাক্যের যে পদের কোনো সম্পর্ক থাকে
না সেই পদ কখনোই কারক সম্পর্কে যুক্ত হয় না। এই ধরনের সম্পর্ককে বলে অ-কারক সম্পর্ক।
যেমন—সম্বন্ধপদ,
সম্বোধন পদ।
৫. একটি বাক্য লেখো যেখানে কারকের বিভক্তি হিসেবে
শুধু শূন্যবিভক্তি ব্যবহৃত হয়েছে।
উত্তরঃ আমি বাড়ি যাইনি—এই
বাক্যটিতে ‘আমি’ একটি কর্তৃকারকবাচক পদ এবং ‘বাড়ি’ হল
অধিকরণকারকবাচক পদ। পদ দুটিতেই শূন্য বিভক্তি ব্যবহৃত হয়েছে।
৬. শব্দ বিভক্তি কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ যে সব বিভক্তি শব্দের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নামপদ গঠন
করে, তাদের শব্দবিভক্তি বলে। যেমন—এ, এতে, তে, য়ে, কে, রে, এরে, এর ইত্যাদি। জামা + য় = আমায়,
বই + ত = বইতে।
৭.ক্রিয়া বিভক্তি কাকে বলে?
উওরঃ ক্রিয়া বা ধাতুর শেষে যে বিভক্তি যুক্ত হয় তাকে ক্রিয়া
বিভক্তি বলে ।
যেমন – পড় + এ = পড়ে।
৮. বিভক্তি ও অনুসর্গের একটি পার্থক্য লেখো।
উওরঃবিভক্তি ও অনুসর্গের পার্থক্য
ü বিভক্তি ও অনুসর্গের প্রধান পার্থক্য হল: অনুসর্গের স্বাধীন
অর্থ ও স্বাধীন ব্যবহার আছে, বিভক্তির স্বাধীন অর্থ ও স্বাধীন ব্যবহার নেই।
ü বিভক্তি পদের সঙ্গে যুক্ত অবস্থায় থাকে। অনুসর্গ পদের পরে
আলাদা ভাবে বসে।
ü বিভক্তি কোনো পদ নয়। অনুসর্গ নিজে এক ধরনের অব্যয় পদ।
৯. দ্বিগু ও বহুব্রীহি সমাসের একটি পার্থক্য লেখো।
দ্বিগু সমাসের পূর্বপদে
সংখ্যাবাচক বিশেষণ পদ ও পরপদে বিশেষ্য পদ থাকে। সংখ্যাবাচক বহুব্রীহি সমাসের
ক্ষেত্রেও তাই। এই কারণে এই দুই সমাসের পার্থক্য নিরূপণ করা অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে।
দ্বিগু ও বহুব্রীহি সমাসের পার্থক্য নির্ণয় করার জন্য আমাদের সমস্তপদের অর্থটি খেয়াল
করতে হবে। দ্বিগু সমাসে পরপদের অর্থ প্রধান হয়, অপরদিকে বহুব্রীহি সমাসে অন্য পদের
অর্থ প্রাধান্য পায়। যেমন: 'ত্রিফলা' বললে তিনটি ফলের সমাহার বোঝায়। এখানে ফলের অর্থই
প্রধান। কিন্তু 'পঞ্চানন' বললে পঞ্চ আনন যাঁর, অর্থাৎ শিবকে বোঝায়।
১০. করণের বীপ্সার
একটি উদাহরন দাও।
উওরঃ বীপ্সা কথার অর্থ হল পৌনঃপুনিকতা বা পুনরুক্তি। একই
কথাকে বার বার বললে তাকে বীপ্সা বলে। বাক্যের করণ কারকটি যদি পর পর দু বার ব্যবহৃত
হয়, তবে তাকে করণের বীপ্সা বলা হয়। নিচে করণের বীপ্সার কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া হলো।
উদাহরণঃ
ü কাজগুলো হাতে হাতে করে ফেলো।
ü
মেঘে
মেঘে আকাশ ভরে গেছে।
১১.অধিকরনের বীপ্সার একটি উদাহরন দাও।
উওরঃ পাতায় পাতায় পড়ে নিশার শশির।
১২. সমধাতুজ করণ কারকের উদাহরণ দাও।
উওরঃ মায়ার বাঁধনে বেঁধেছ আমায়।
১৩. সম্বন্ধ পদ কাকে বলে?
উওরঃ কোনো বস্তু বা ব্যক্তির ওপর অন্য কোনো বস্তু বা ব্যক্তির
অধিকার থাকলে তাকে সম্বন্ধপদ বলে।
সম্বন্ধপদে সাধারণত ‘র’ এবং
‘এর’ বিভক্তি
যুক্ত হয়। সচরাচর স্বরান্ত শব্দে ‘র’ এবং ব্যঞ্জনান্ত শব্দে ‘এর’ বিভক্তিচিহ্ন
যোগ করা হয়। যেমন—রাজার, রামের | সম্বন্ধপদের সঙ্গে ক্রিয়ার প্রত্যক্ষ কোনো
সম্পর্ক হয় না, তাই একে কারক বলা যায় না। সম্বন্ধপদ হল একটি নামপদের সঙ্গে আর একটি
নামপদের বিশেষ সম্বন্ধ।
১৪. নিরপেক্ষ
কর্তা কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উওরঃ নিরপেক্ষ কর্তা- কোন বাক্যে উভয় সমাপিকা ও অসমাপিকা ক্রিয়ার বিভিন্ন
কর্তা থাকলে অসমাপিকা ক্রিয়ার নিয়ন্ত্রক কর্তাটিকে নিরপেক্ষ কর্তা বলা হয়। যেমন-
‘তুমি’ মাতৃহীন হইলে আমি তোমার প্রতিপালন করিয়াছিলাম। এখানে তুমি
হল নিরপেক্ষ কর্তার উদাহরণ। ‘দাঁত’ থাকতে মানুষ দাঁতের মর্যাদা বোঝে না। এখানে দাঁত হলো নিরপেক্ষ
কর্তার উদাহরণ।
১৫. সহযোগী কর্তা
কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উওরঃ সহযোগী কর্তা- বাক্যে যদি দুটি কর্তা থাকে এবং তাদের পরস্পরের মধ্যে
সহযোগিতায় ভাব থাকে অর্থাৎ দুই বা ততোধিক কর্তার মধ্যে সহযোগিতা থাকলে তাকে সহযোগী
কর্তা বলে। যেমন –‘তুমি আমি’ মিলে পৌঁছে যাব। এখানে তুমি আমি কর্তা দুটির মধ্যে সহযোগিতায়
ভাব থাকায় এটি সহযোগী কর্তার উদাহরণ। শাশুড়ি -বউয়ে বসে রুটি করছে। এখানে শাশুড়ি
ও বউ কথা দুটির মধ্যে সহযোগিতার ভাব থাকায় এটি সহযোগী কর্তা উদাহরণ।
জ্ঞ্যানজ্যোতি কোচিং সেন্টার
তোমাদের উজ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলব আমরা, এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি
অনলাইনে কোচিং নিতে হলে এবং বিভিন্ন নোট নিতে হলে এই নাম্বারে কল করুন।